বাংলায় ফুলের ঋতু হচ্ছে বসন্ত। বসন্তের আগমন হলে ফুলের বার্তা পৌঁছায় বাঙালির হৃদয়ে। তবে বিভিন্ন সময়ে ফুলের প্রয়োজন হয়। তাইতো দেশি-বিদেশি হরেক রকমের রং বে-রংয়ের ফুলের পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন দোকানিরা।
এমনিভাবে জমকালো রংয়ের নানা প্রজাতির ফুল নিয়ে রাজধানীর বনানী কাঁচা বাজার ঘেঁষে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। এখানে ছোট-বড় মিলে একসঙ্গে প্রায় ১০টির মতো ফুলের দোকান রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফুল প্রেমী ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে এখানে দেশি-বিদেশি নানা প্রকারের ফুল সংগ্রহে রেখেছেন তারা। এসব দোকানে পাওয়া যায় দেশি গোলাপ, লাল গোলাপ, হলুদ গোলাপ, কমলা গোলাপ, সাদা গোলাপ, চায়না গোলাপ, কাঠ গোলাপ, রজনীগন্ধা, দোলন চাঁপা, লিলি, গাঁদা, ডালিয়া, দিঘলদী, মাধবপাশা, আইছতলা, বেলি, জিপসি, জারবেরা, কাঠমালতি, চন্দ্রমল্লিকা, গোল্ডেন স্টিকসহ নানা প্রজাতির ফুল।
অনেকের মতে, প্রিয়জনকে খুশি করতে কিংবা উপহার দিতে সবচেয়ে ভালো উপহার হচ্ছে ফুল।
ক্রেতারা জানান, নবীন বরণ কিংবা প্রবীণদের বিদায়, পদোন্নতি কিংবা স্থানান্তর, বিয়ে কিংবা জন্মদিন, বিশেষ কিছু অর্জনে স্বাগত জানাতে ফুল ছাড়া যেন কল্পনাই করা যায় না। এমনকি মৃত ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেও ব্যবহৃত হয় ফুল। সব মিলিয়ে নিত্যদিনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফুল।
বাংলাদেশের যেসব জাতীয় দিবসে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় তার মধ্যে রয়েছে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, মাতৃভাষা দিবস, বুদ্ধিজীবী দিবস, শোক দিবস অন্যতম।
এর বাইরেও পহেলা বৈশাখ, ভ্যালেন্টাইন ডে, মাদার্স ডে কিংবা বন্ধু দিবসেও জনমনের অন্যরকম খোরাক জোগায় এসব ফুল।
রোববার (১৬ জুন) রোমানা নামে এক বেসরকারি কর্মকর্তা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অফিসে নতুন বস আসবেন। তাকে বরণ করতে ফুল কিনতে এসেছি। বনানীর এ অঞ্চলের মানুষের ফুলের চাহিদা মেটায় এসব দোকান। এখানে প্রায় সব ধরনের ফুল পাওয়া যায়।’
তবে ফুলের ব্যবসায় লোকসানের শঙ্কা সব সময়ই থাকে বলে জানান বিক্রেতারা। বিভিন্ন সামাজিক বা জাতীয় দিবসে ফুলের চাহিদা বেড়ে গেলেই কেবল বাড়তি উপার্জন করা সম্ভব হয়।
ওই এলাকার দোলন চাঁপা ফ্লাওয়ার স্টোরের বিক্রেতা সেলিম বার্তা২৪.কমকে জানান, ফুলের চাহিদা বছর জুড়ে একই রকম থাকে। কিছু কিছু দিবসে ফুলের দাম কিছুটা বেড়ে যায়। কারণ এ সময় চারদিকে প্রচুর ফুলের চাহিদা থাকে। ফলে খামারিরাও দাম বাড়িয়ে দেন। এক সঙ্গে অনেক ফুল আনতে গিয়ে নষ্টও হয়ে যায়। তাছাড়া ফুল সংগ্রহ করে রাখা যায় না। তাই তাদের হাতেও কিছু থাকে না। তবুও লোকসান মেনে নিয়ে ব্যবসা করেন।
তবে দেশে ফুলের চাহিদার জোগান দিতে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হতে ফুল চাষের পরামর্শও দেন তিনি।