কুলি চার্জ নির্ধারণ হলেও দৌরাত্ম্য কমেনি

ঢাকা, জাতীয়

তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 19:24:05

কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে যাত্রী নিয়ে ট্রেন ছেড়ে যায় আবার একইভাবে যাত্রী নিয়ে কমলাপুর স্টেশনে ফিরে আসে। স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে প্রতিদিন ঢাকা থেকে সব মিলিয়ে ৫২ টি ট্রেন ছেড়ে যায়।

এদিকে যাত্রীদের মালামাল বহনের জন্য কমলাপুর রেল স্টেশনে কুলিদের জন্য একটা নির্ধারিত চার্জ ঠিক করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, প্লাটফর্ম থেকে মালামাল বাইরে নিয়ে আসতে নির্ধারিত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন কুলিরা।

সোমবার( ২৪ জুন) কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন জায়গায় কুলি দিয়ে মালামাল বহনের নির্ধারিত ভাড়া কত তা পোস্টারে লাগানো আছে। কিন্তু কোন কুলিই যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত টাকা না নিয়ে বেশি টাকা নিচ্ছেন। সরেজমিনে যাত্রীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

কমলাপুর রেল স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মো : আমিনুল হক বলেন, কমলাপুর স্টেশনে নিবন্ধিত কুলির সংখ্যা ২০০ জনের মতো হবে। এর বাইরে অনেকে যাত্রীদের মালামাল বহনে কাজ করে থাকেন। এছাড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে স্টেশনে মালামাল বহনকারীদের পরিচয়পত্র ও নির্ধারিত পোশাকের মাধ্যমে কুলি ব্যবস্থাপনায় অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।মালামাল বহনের ট্রলি, বয়স্ক, অসুস্থ প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে যাত্রীদের কাছ থেকে কুলিদের বাড়তি ভাড়া নেওয়ার দৌরাত্ম্য এখনও কমেনি।

মালামাল বহনে স্টেশন কর্তৃপক্ষ কুলিদের জন্য যে চার্জ নির্ধারণ করেছেন তা হলো:  ২৮ কেজির একটি ব্যাগ ১৫ টাকা, ২৮ কেজির দুটি ব্যাগ ২০ টাকা, ৩৭ কেজির একটি ব্যাগ ২০ টাকা, ৩৭ কেজির দুটি ব্যাগ ২৫ টাকা, ৫৬ কেজির একটি ব্যাগ ৩০ টাকা, ৫৬ কেজির  বেশি ওজনের ব্যাগ ৩৫ টাকা, ট্রলি, যাত্রীদের দ্বারা ব্যবহার করলে ১৫ টাকা, ট্রলি কুলিকে দিয়ে ব্যবহার করানো হলে ২০ টাকা, হুইল চেয়ার যাত্রীরা ১০ টাকা,  হুইল চেয়ার কুলিকে দিয়ে ব্যবহার করানো হলে ২০ টাকা।

রাজশাহী থেকে কমলাপুর আসা বনলতা এক্সপ্রেসের যাত্রী রাশেদ হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, যাত্রী পরিবহনে আমাদের রেল ব্যবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি করেছে। রাজশাহী থেকে পাঁচ ঘণ্টায় আমি ঢাকায় চলে এসেছি। কিন্তু স্টেশনে নামার পর মালামাল বহনে কুলিদের ভাড়া নিয়ে যে দৌরাত্ম্য সেটি এখনও কমেনি। ফলে স্টেশনে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

রংপুর থেকে আসা আরেক যাত্রী অভিযোগ করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্টেশনে নামার পর মালামাল দেখলেই কুলিরা ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাবি করছে। কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে স্টেশনের বাইরে যেতে হয়। স্টেশনে কুলিদের সিন্ডিকেট আছে কেউ কম টাকায় যেতে চায় না।

নির্ধারিত কুলি চার্জের ব্যাপারে জানতে চাইলে স্টেশনের নিবন্ধিত কুলি মুন্না ভাই কুলি নাম্বার ১৪৯ বার্তা২৪.কমকে বলেন, নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা আমরা নিয়ে থাকি এটা অস্বীকার করব না। তবে আপনি চিন্তা করেন এই যুগে এত কম টাকায় ছেলে, মেয়ে নিয়ে সংসার চলে? স্টেশন কর্তৃপক্ষ ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেটা খুবই স্বল্প। আর সব সময় তো যাত্রী পাই না্ ঈদ, পূজা-পার্বণ ছুটি হলে যাত্রী একটু বেশি হয়।

এসব বিষয় নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার-২ নৃপেন্দ্র সাহা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা যাত্রীদের হয়রানি এবং ভোগান্তি কমাতে মালামাল বহলে কুলিদের জন্য নির্ধারিত ভাড়া ব্যবস্থা করে দিয়েছি। নির্ধারিত চার্জে যদি কোন নিবন্ধিত কুলি মালামাল বহন করতে না চায় বা বাড়তি ভাড়া দাবি করে তাহলে কুলিদের আইডি নাম্বার সহ স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমাদের কাছে কোনো যাত্রী এখন পর্যন্ত ফরমালি অভিযোগ করেননি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর