মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধে দেশব্যাপী সভা

বিবিধ, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 12:01:40

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ নির্মূলে সারা দেশে বিক্রেতাদের সাথে জনসচেতনতামূলক সভা করছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজশাহী এবং ঢাকার মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, নকল, ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ নির্মূলে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য তিনি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সব কার্যালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- ওষুধ ব্যবসায়ীদের সাথে জনসচেতনতামূলক সভা করতে হবে।

‘আগামী ২ জুলাইয়ের মধ্যে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ ফার্মেসি থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ফেরত নেবেন। এ লক্ষ্যে সারা বাংলাদেশে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্মকর্তাবৃন্দ, কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি ও বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি কাজ করে যাচ্ছে।’

রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের বিষয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে সচেতন হতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ একটি ওষুধও ক্ষতিকর, একটিও যেন ক্রেতার হাতে না পৌঁছায়।

‘ফার্মেসির কোথাও মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ মওজুদ/সংরক্ষণ করা যাবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রয়ের জন্য সেলফ/ড্রয়ার/রেফ্রিজারেটর অথবা ফার্মেসির অন্য কোথাও পাওয়া গেলে জব্দ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ আলাদা কন্টেইনারে ‘মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রির জন্য নয়’ লাল কালি দিয়ে লিখে সংরক্ষণ করতে হবে এবং যথা শিগগিরই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। এ বিষয়ে রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেলে ফার্মেসিটি সিলগালা/বন্ধ করাসহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ও ফার্মাসিস্টবিহীন ফার্মেসি ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না। ফার্মেসিতে আইনতভাবে ফার্মাসিস্টের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। আনরেজিস্টার্ড, নকল, ভেজাল, মিসব্রান্ডেড, কাউন্টারফেইট ওষুধ, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল, সরকারি ওষুধ, রোগ নিরাময় করে এমন দাবিকৃত ফুড সাপ্লিমেন্ট ফার্মেসিতে মজুদ ও বিক্রয় করা যাবে না। নকল ভেজাল আনরেজিস্টার্ড ওষুধ বিক্রয় বন্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ব্যতীত এন্টিবায়োটিকসহ অন্য কোনো ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। রোগী এন্টিবায়োটিকের ফুল কোর্স যাতে সেবন করে সে বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করতে হবে এবং ফুল কোর্স এন্টিবায়োটিক সরবরাহ করতে হবে।

‘ফার্মেসিতে এ বিষয়ে রেজিস্টার মেইনটেইন করতে হবে। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্দেশক মূল্যের চাইতে অধিক মূল্যে ঔষধ বিক্রয় করা যাবে না এবং মোড়ক সামগ্রীতে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্দেশক মূল্যের স্টিকার সংযোজন বা মূল্য কেটে কলম দিয়ে লেখা যাবে না। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’

‘ওষুধ ক্রয় এবং বিক্রয়ের ডকুমেন্টস সংরক্ষণ করতে হবে। ওষুধ বৈধ সোর্স থেকে ইনভয়েসের মাধ্যমে ক্রয় করতে হবে। ঔষধ বিক্রয়ের ক্যাশ ম্যামো সরবরাহ করতে হবে। তাপ সংবেদনশীল ওষুধসমূহ যথাযথ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা মনিটরিং করতে হবে। ডিপ ফ্রিজে ঔষধ সংরক্ষণ করা যাবে না।ফার্মেসিতে সরকারি ওষুধ ও ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রি করা যাবে না। সরকারি ওষুধ ও ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রি করা আইননত দণ্ডনীয় অপরাধ।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুক্রবার (২৮ জুন) এবং নাটোরে (২৯ জুন) এই সভা হবে। একই সাথে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নাটোরে মডেল ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ উদ্বোধন করবেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর