টয়লেট থেকে নতুন ঘরে ঠাঁই হলো শতবর্ষী সেই বৃদ্ধার

রংপুর, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-08-14 00:00:43

মাল্টিমিডিয়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম-এ ‘সন্তান থাকার পরও শতবর্ষী মায়ের বসবাস টয়লেটে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর টয়লেট থেকে নতুন ঘরে ঠাঁই পেয়েছেন নছিমন বেওয়ার। জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এই বৃদ্ধার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।

শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে রংপুর মহানগরীর নিউ জুম্মাপাড়া কলোনিতে মসিউর রহমান রাঙ্গার ব্যক্তিগত সহকারী বৃদ্ধা নছিমন বেওয়ার হাতে নতুন ঘরটি তুলে দেন।

আলো ঝলমলে নতুন ঘরে ঢুকে আনন্দে উদ্বেলিত নছিমন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তিনি তার ছেলে ও নাতিকে জড়িয়ে ধরেন। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘মোর (আমার) স্বামী নাই। ব্যাটারায় (ছেলেরা) মোর ভরসা। কিন্তু ঘরোত (ঘরে) জায়গা না থাকাতে মোক (আমার) টয়লেটোত (টয়লেট) থাকা লাগছে। আজই খুব ভালো লাগতেছে। সোগ (সব) কিছু নতুন।’

এদিকে বৃদ্ধা মাকে টয়লেট রাখার ভুল স্বীকার করে নছিমন বেওয়ার বড় ছেলে জয়নাল মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি অন্যায় করেছি। নিজে ঘরে থেকে মাকে টয়লেটে রেখেছিলাম। ঘরে জায়গা ছিল না। তাই এটা করেছিলাম। আজ রাঙ্গা সাহেব আমার মাকে নতুন ঘর উপহার দিয়েছেন। আমি বাকি জীবনটা মাকে বুকে আগলে রাখতে চাই।’

আরও দেখুন: সন্তান থাকার পরও শতবর্ষী মায়ের বসবাস টয়লেটে

আরও পড়ুন: শতবর্ষী সেই বৃদ্ধার পাশে তরুণ-তরুণী

টয়লেট থেকে বৃদ্ধা নছিমন বেওয়ার নতুন ঠিকানা করে দিতে পারায় আনন্দিত সাবেক প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গার ব্যক্তিগত সহকারী শাহিন হোসেন জাকির। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বার্তা২৪.কম এ বৃদ্ধা মায়ের মানবেতর জীবনযাপনের সংবাদটি আমাকে ফেসবুকের ‘আমরাই পাশে রংপুর’ গ্রুপ অবগত করেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে স্যারকে বিষয়টি জানালে তিনি (রাঙ্গা) ওই বৃদ্ধার বসবাসের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করাসহ থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর আমি ‘আমরাই পাশে রংপুর’ গ্রুপের মাধ্যমে বৃদ্ধা নছিমনের জন্য নতুন ঘর নির্মাণসহ সব ব্যবস্থা করেছি।’

এ ব্যাপারে আমরাই পাশে রংপুর গ্রুপের এডমিন আল-আমিন সুমন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আমরা জাতীয় পার্টির মহাসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বৃদ্ধা নছিমনের আমৃত্যু ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন। বৃদ্ধার থাকার জন্য নতুন ঘর নির্মাণ করাসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র কেনাকাটা, নলকূপ স্থাপন, চিকিৎসা সেবাসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধার জন্য মসিউর রহমান রাঙ্গা অর্থায়ন করেছেন। আমরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তার দেখাশুনা ও তত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করছি। একই সঙ্গে তাকে গ্রুপের পক্ষ থেকে প্রতিমাসে দুই হাজার টাকা করে ভাতা দেয়া হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর