সংসদীয় কূটনীতির মাধ্যমে সমতাভিত্তিক বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় সংসদ সদস্যদের (এমপি) এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সন্ধ্যায় রাশিয়ার মস্কোয় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দ্য স্টেট দুমা অব দ্য ফেডারেল এসেম্বলি অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশন আয়োজিত দ্য সেকেন্ড ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ‘ডেভেলপমেন্ট অব পার্লামেন্টারিজম-২০১৯’ এর দুই দিনব্যাপী কনফারেন্সে ‘ইন্টার-পার্লামেন্টারি কো-অপারেশন: প্রিন্সিপালস, ট্রেন্ডস অ্যান্ড ইনস্টিটিউট’ শীর্ষক সেশনে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন স্পিকার। বুধবার (৩ জুলাই) সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্পিকার বলেন, ‘জনগণের অধিকার সুরক্ষায় বিশ্বের সব রাজনীতিবিদদের একই ভাষায় সোচ্চার হতে হবে। যে রাজনীতির অভিন্ন লক্ষ্য হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতা ও শান্তির ভিত্তিতে কল্যাণময় বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করা।’
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি, কারিগরি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখযোগ্য। বৈশ্বিক পরিবর্তনের ধারায় ইতিবাচক ফলাফল আনতে সব সংসদ সদস্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতন্ত্রের সুফল ও ইতিবাচক মূল্যবোধ হতে হবে ‘সমাজে কেউ পিছিয়ে থাকবে না’-তবেই গণতন্ত্র টেকসই হবে। দারিদ্র দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা, শরণার্থী, অভিবাসন সমস্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা সমস্যা পৃথক রাষ্ট্রীয় সীমারেখায় আবদ্ধ। এসব সমস্যা সমাধানে সংসদীয় কূটনীতি একটি শক্তিশালী মাধ্যম।’
সংসদীয় কূটনীতির মাধ্যমে আন্তঃসংসদীয় ফোরামে জটিল সমস্যাগুলো আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে স্পিকার উল্লেখ করেন।
ড. শিরীন শারমিন বলেন, ‘স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতার মাধ্যমে দায়িত্বশীল ও শক্তিশালী সংসদ গড়ে তোলা সম্ভব। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের পরপরই বাংলাদেশ আইপিইউ, সিপিএ, পিইউআইসিসহ আন্তঃসংসদীয় বিভিন্ন ফোরামের সদস্য হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।’
‘সমতাভিত্তিক অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংসদীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য, দারিদ্রমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণ। যেখানে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত থাকে, যা ছিল বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন।’
দ্য স্টেট দুমা অব দ্য ফেডারেল এসেম্বলি অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশনের চেয়ারম্যান মি. ভায়াচেসলাভ ভলোডিনের (Mr. Vyacheslav Volodin) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেশনে মরক্কো, কোরিয়া, ইরানসহ অন্যান্য দেশের পার্লামেন্টের স্পিকাররাও বক্তব্য দেন।
সেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু, মো. জিল্লুল হাকিম এবং অন্যান্য দেশের অংশগ্রহণকারীরা উপস্থিত ছিলেন।