প্রসেস সিম্পলিফাই করে সরকারি সেবা ডিজিটাল হচ্ছে: জয়

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-28 17:54:08

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আমরা সরকারি সেবা ডিজিটাল করছি, আমরা তার সাথে সাথে প্রসেস সিম্পলিফিকেশন (সরলীকরণ) করছি। আমরা বর্তমান সব প্রসেসকে শুধু ডিজিটালই করছি না, আমরা প্রসেসকে সিম্পলিফাই করে তারপর সেটাকে ডিজিটাইজড করছি। তার ফলে আমাদের সময় বেঁচে যাচ্ছে।

সরকারি নতুন কোনো সেবা ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে প্রসেসটাকে সিম্পলিফাই করে সেটি করা হচ্ছে কি-না, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে সংসদ সদস্যদের অনুরোধ জানান তিনি।

বুধবার (১০ জুলাই) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ: সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি' শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সজীব ওয়াজেদ বলেন, যখন ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ভিশন ২০২১ -এর স্বপ্ন প্রকাশ করি, তখন বাংলাদেশে ডিজিটাল বলতে কিছুই ছিল না। ইন্টারনেট কানেকশন, আজকের থ্রি জি, ফোর জি, ই গভার্নেন্স, সরকারি সেবা; কিছুই ডিজিটাল ছিল না।

তিনি বলেন, ১০ বছরের মধ্যে এত কিছু ডিজিটাইজড হয়ে যাবে, এটি বিশ্বের খুব অল্প দেশই পেরেছে। অন্যান্য দেশ করেছে কিন্তু তারা ওই ২০ বছর ধরে, ৩০ বছর ধরে এগুলো করেছে।

প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড কেবল নিয়ে যাওয়ার প্রজেক্ট চলমান আছে জানিয়ে জয় বলেন, ১০ বছর আগে ঢাকা চট্টগ্রামের বাইরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন কোথাও পাওয়া যেত না। আজকে আমরা সারাদেশে উপজেলা লেভেল পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল পৌঁছে দিয়েছি। ১ লাখ ২০ হাজার কিলোমিটার ফাইবার আমরা বসিয়েছি মাত্র ১০ বছরে। ই-গভার্নেন্স তথা সরকারি সেবা রয়েছে ১৫০০ -এর মত। ইতোমধ্যে ৩০০ -এর ওপরে ডিজিটালাইজড হয়ে গেছে। এই যে আস্তে আস্তে যত সার্ভিস আমরা ডিজিটাইজ করছি, তাতে কিন্তু আমাদের কাগজ কলমে ফাইল রাখার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে আসছে।

ডিজিটালাইজেশনের উপকারী দিক তুলে ধরে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জয় বলেন, একজন ব্যক্তির প্রাথমিক তথ্য এখন সরকারি ডাটাবেজে আছে, পরিচয় শনাক্তের জন্য কোনো চিঠি সার্টিফাইড করার প্রয়োজন নেই, আপনি শুধু আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ডটা দেবেন। আমি এটাকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি; সেটা হলো- আপনার ওই আইডি কার্ডও লাগবে না, আপনি শুধু আপনার আঙ্গুলের ছাপ দেবেন, আপনার নামও বলার প্রয়োজনও নেই। এর ফলে প্রথম যে সুবিধাটা হচ্ছে, সেটা আমাদের সময় বেঁচে যাচ্ছে। আগে যে কাজটা করতে ২ সপ্তাহ সময় প্রয়োজন হত, সেটি মাত্র ২০ মিনিটে করা যাচ্ছে।

সরকার খুব শিগগিরই ই-ফাইলিং সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রীর উপেদষ্টা। তিনি বলেন, এর ফলে আমাদের এফিসিয়েন্সি বাড়বে। যেটা আমাদের অর্থনীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। এখন আমরা বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতির দেশ, আমরা যদি এই এফিসিয়েন্সিটা বাড়াতে পারি তাহলে নম্বর থ্রি, টু, ওয়ানে চলে যেতে পারি। জিডিপি ৮ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে যেতে পারি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেটা সম্ভব।

দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সংসদ সদস্যদের মাইন্ডসেটে পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে জাতির পিতার এই দৌহিত্র বলেন, তরুণ প্রজন্ম আর সিনিয়রদের মধ্যে মাইন্ডসেটের একটা ভাগ থাকে। জেনারেশনাল গ্যাপ যেটাকে বলা হয়। নিজেদের আগের যে চিন্তাধারা ভয়, এগুলো ছেড়ে যে মডার্ন পদ্ধতিতে নিজেদের নিয়ম আইন নীতিমালা একটু পরিবর্তন করি। সেটা করতে পারলে আমরা আরো দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর