সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-08-30 23:58:48

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে নেয়া সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধণী বাতিলের এক মাসের মাথায় এ রায় প্রকাশ করলেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাসহ আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ৭৯৯ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ৩ জুলাই হাইকোর্টের দেয়া রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণ এক্সপাঞ্জ (বাদ দিয়ে) করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ‘সর্বসম্মতভাবে’ খারিজ করে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। রায়ে নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের আওতায় আনার পক্ষে মত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতিসহ তিন বিচারপতি। তবে বেঞ্চের অপর চার বিচারপতির মধ্যে তিনজন এ বিষয়ে কোনো মতামত না দিলেও একজন বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করেছেন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে। যদিও বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে গেলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো বলেও মত দিয়েছেন বিচারপতিরা। ২০১৪ সালে সংসদে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হলে তা রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা সৃষ্টি করে। এর মধ্যে আসাদুজ্জামান সিদ্দিকীসহ সুপ্রিমকোর্টের ৯ জন আইনজীবী একটি রিট আবেদন করেন হাইকোর্টে। ২০১৬ সালে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দেয়া রায়ে সংবিধানের এই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা হয়। হাইকোর্টের এই রায় রাজনৈতিক অঙ্গনেও উত্তাপ ছড়িয়েছিল। সংসদে ওয়াকআউটের ঘটনা ঘটে। আদালত মোট ১২ জন আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার রফিক উল হক ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মতামত দেননি। তাদের বাইরে ‘ইন্টারভেনার’ হিসেবে সংবিধানের এই সংশোধনের পক্ষে যুক্তি দেখান সাবেক আইনমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়, যাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা ফিরে পায় সংসদ। বিলটি পাসের পর ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ৯ আইনজীবী। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল দেয়। রুলে ওই সংশোধনী কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। ২০১৬ বছরের ৫ মে হাইকোর্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয় ওই বছরের ১১ আগস্ট। তিন বিচারকের ওই বেঞ্চের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন। অন্য বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল তাতে ভিন্নমত জানিয়ে আলাদা রায় দেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর