বন্যার প্রভাবে নিত্যপণ্যের বাজার চড়া

ঢাকা, জাতীয়

রাকিবুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-26 15:54:17

দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ও টানা বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানীর নিত্যপণ্যে বাজারে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। চড়া বাজারে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে সবজির বড় মোকাম উত্তরাঞ্চল। আর উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধার পাশাপাশি জামালপুরসহ দেশের অনেক জেলা এখন বন্যা কবলিত। এরমধ্যে কোন কোন এলাকার বন্যা পরিস্থিতি এতটাই মারাত্মক যে স্থানীয় প্রশাসক সেসব এলাকাকে দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফলে চাহিদামতো পণ্যে সরবরাহ নেই। এ জন্য বাজার চড়া।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে এসব জানান তারা। চড়া বাজারেও ছুটির দিনে বাজারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সবার অভিযোগ, কাঁচা বাজারের সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

ক্রেতারা বলছেন, কারওয়ান বাজার পাইকারি হওয়াতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম বাড়লে কিছু কেনাকাটা করা যায়, তবে খুচরা বাজারের পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে থাকে। 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা পেঁপে, বরবটি, পটল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স, করলা, কচু ও করলা প্রতিকেজি ১০টা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। শষার দাম বেড়ে প্রতিকেজি হয়েছে ৮০ টাকা, গাঁজর ৬০ টাকা আর পাকা টমেটো ১০০ টাকা। কাকরোল ৪০ টাকা, ঢেড়স ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা। মাঝারি সাইজের মিষ্টি কুমড়ার প্রতিপিচ ৫০ টাকা আর লাউয়ের দাম ৬০ টাকা। তবে দাম সহনীয় রয়েছে আলুতে। এখনও প্রতিকেজি দাম রয়েছে ২০ টাকা।

থেমে নেই আদা, রসুন আর পেঁয়াজের দাম। প্রকার ভেদে প্রতিকেজি আদার দাম ১৬০ টাকা আর রসুনের দাম কেজিতে ১৫০ টাকা। তবে ইন্ডিয়ান পেঁয়াজের আমদানি ভালো থাকায় দাম ছিল কিছুটা স্থিতিশীল। প্রতিকেজি ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা দরে। দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পান্থপথ থেকে আসা জাহেদুল নামের এক ক্রেতা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, প্রত্যেকটা সবজির দামই বেশি। তারপরও একটি কথা স্বীকার করতে হয়ে, কারওয়ান বাজারের তুলানায় অন্য এলাকার সবজির বাজার মারাত্মক রকমের বেশি। এখানে ১০ টাকা কেজিতে বেড়েছে তো খুচরা বাজার কিংবা আবাসিক এলাকার বাজারগুলোতে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। ৬০ টাকার কমে এক কেজি সবজি আশা করাই যায় না।

বন্যায় সবজির আমদানি কম থাকায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়ে আল আমিন নামে এক সবজি বিক্রেতা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, যে সব এলাকা থেকে সবজি আসে, মূলত এসব এলাকায় বন্যা। মানুষ নিজেই পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে। আর সবজি গেছে নষ্ট হয়ে। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় সবজির আমদানি অনেক কম। আবার নতুন সবজি বাজারে আসলে তখন হয়তো দাম কিছুটা কমবে।

আরেক সবজি বিক্রেতা মজিবর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, গতকাল ম্যাজিস্ট্রেট এসে বাজারে সবজির দাম নির্ধারণ করে দিয়ে গেছেন। কিন্তু আজ প্রতি কেজিতে ১০/২০ টাকা করে বেড়েছে। এখন আমাদের কী করার আছে? আমরা কালকের রেটে বিক্রি করলে আজ লোকসানে বিক্রি করতে হবে।

এদিকে, বন্যার কারণ দেখিয়ে মাছের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ভারি বর্ষণে পুকুর নদ নদী প্লাবিত হওয়ায় মাছের আমদানিতে পড়েছে ভাটা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি মাছে দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা।

তবে স্থীতিশীল রয়েছে মাংসের বাজার। বরাবরের মতই প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। আর লাল মুরগী বিক্রি হয়েছে ২২০টাকায়।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর