সরল বিশ্বাসে কিছু করলে অপরাধ নয় বলেছি : দুদক চেয়ারম্যান

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-22 14:23:24

সরল বিশ্বাসে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করা কাজ কোনো অপরাধ নয় সম্প্রতি দেওয়া এমন বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, 'এ ব্যাপারে আমার উত্তর একেবারে সহজ। একটি প্রশ্নের বিপরীতে আমি যে উত্তর দিয়েছিলাম সেখানে আমি দুর্নীতি শব্দটি উচ্চারণ করি নাই। আপনারা দেখেতে পারেন। দুর্নীতি কিভাবে আসলো আই হ্যাভ নো আইডিয়া। যারা এনেছেন সেটা তাদের দায়, মোটেও আমার দায় নয়।'

শনিবার (২০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে 'দুর্নীতি দমনে আইনজীবী এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।

১৯ জুলাই সচিবালয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এটা সবার জন্য যে সরল বিশ্বাসে সরকারি কর্মকর্তারা কিছু করলে সেটা কোনো অপরাধ নয়, সরল বিশ্বাসে যদি আপনি কোনো কাজ করেন, এবং সেটা যদি বড় কিছুও হয় তাও কোনো অপরাধ নয়। তিনি বলেন, পেনাল কোডেই বলা আছে যে, সরল বিশ্বাসে কৃতকর্ম কোনো অপরাধ নয়, জেনারেল একসেপশন বলে এটাকে। কিন্তু আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে সরল বিশ্বাসে আপনি এ কাজটা করেছেন।'

এ প্রসঙ্গে আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, 'আমি কোনো ব্যাখ্যা দিতে প্রস্তুত নই। কারণ আপনারা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন পরিষ্কার করতে। আমি পরিষ্কার করেছি ওখানে।'

দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, 'অনেকেই বলেন সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিদের কিছু করা হয় না। আমার জানামতে আন্ডার প্রসিকিউশন, আন্ডার ইনভেস্টিগেশন এর নামে ইনকোয়ারিতে ১০ থেকে ১৫ জন রয়েছেন সরকার দলীয়। এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক দলে রয়েছে ১৫ জন, আরেক দলে রয়েছে ১২ জন, আরেক দলের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ইন কোয়ারিতে আছে প্রায় ২৫ জন। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন আমলা রয়েছে সচিব থেকে শুরু করে জয়েন সেক্রেটারি পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন আছে। ইনভেস্টিগেশনের সময় তথ্য প্রকাশ হলে সেটি বিব্রতকর হয়ে পড়ে। সেজন্য সব তথ্য জানিয়ে দেওয়া একটু অসুবিধার বিষয়। এরপরও কিভাবে যেন সেই তথ্য পাচার হয়ে যায়। সেটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, সেই দায় আমার।'

ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক আকাশ থেকে উড়ে আসে নাই। এখানে যারা কাজ করেন তারা কিন্তু বিদেশ থেকে আসে নাই। আমরা সবাই এই সমাজের মানুষ। আমরা সবাই এই মাটির সন্তান, এই পরিবেশের প্রোডাক্ট। এই সমাজেরই অংশ। সমাজের অন্যান্য জায়গায় যা হয়, আমার এখানে তা হয় না কথাটা সঠিক নয়। ছোট গাছ উপড়ে ফেলার যতটা সহজ, বট গাছ উপড়ে ফেলা অনেক কঠিন। তাই বলে যে আমরা বট গাছ ধরছি না তা নয়।

এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'আপনারা সংবাদ পরিবেশন করবেন যাতে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না হয়। ব্যক্তি ক্ষতি হোক অসুবিধা নাই। কারণ, প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের, সরকারের নয়। আমাদের ব্যর্থতা আছে। সে ব্যর্থতা কাটানোর জন্য কি করা যায় সেটা আপনারা বলুন। সবার সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া দুর্নীতি দমন সম্ভব না।'

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমীর-উল-ইসলাম, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. নিজামুল হক।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট অ্যাড. মনজিল মোরসেদ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর