সদরঘাটে ভাসমান বোর্ডিংয়ে ৪০ টাকায় থাকার ব্যবস্থা

ঢাকা, জাতীয়

তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-31 19:28:19

রাজধানীর সদরঘাটের ওয়াইজঘাট এলাকায় প্রায় ৬০ বছর ধরে রয়েছে ভাসমান হোটেল বা বোর্ডিং। বুড়িগঙ্গা নদীতে সারিবদ্ধভাবে ভেসে আছে পাঁচটি ভাসমান হোটেল। এসব হোটেলের ডেকে মাত্র ৪০ টাকায় রাত্রি যাপন করার ব্যবস্থা আছে। তবে একদিনের জন্য কেবিন ভাড়া গুনতে হয় ১০০ টাকা।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সদরঘাটের ওয়াইজঘাট এলাকায় ভাসমান হোটেলগুলো ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। এসব হোটেলে সাধারণত নিম্ন আয়ের ব্যবসায়ীরাই থাকেন।

ভাসমান এসব হোটেল ঘুরে জান যায়, ভাসমান হোটেলের ঐতিহ্য বেশ পুরানো। একটা সময় বুড়িগঙ্গার বুকে ভাসতো অসংখ্য ভাসমান হোটেল। এসব হোটেলের সংখ্যা এখন কমে এসেছে। যদিও এসব হোটেল তেমন মানসম্মত নয়। তবে এখানে অনেকেই মাসের পর মাস থাকছেন।

কম টাকায় থাকতে পারার বাইরে ভাসমান হোটেলের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- কোনো দরিদ্র মানুষকে টাকার অভাবে ফিরিয়ে দেয়া হয় না। হোটেলের কোন এক জায়গায় তাদের মাথা গোঁজার একটু ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।

ভাসমান ফরিদপুর মুসলিম হোটেলের ম্যানেজার মো. মোস্তফা আলি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'এখানে মোট পাঁচটি ভাসমান হোটেল আছে। এ সব হোটেলে ৩৫-৪৮ জনের থাকার ব্যবস্থা আছে। এখানে বিদ্যুৎ ও ফ্যানসহ সব সুযোগে সুবিধা আছে। ৪০ টাকা দিয়ে একদিন থাকা যায়।

শরীয়তপুর থেকে আসা ফল ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'যেহেতু ঢাকায় ফল বিক্রি করি তাই সারাদিন পর রাতে কম খরচে ভাসমান হোটেলই ভরসা। এর বাইরে ভালো মানের হোটেলে থাকতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন।’

শরীয়তপুর মুসলিম হোটেলের গ্রাহক আব্দুল কুদ্দুস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষের থাকার জন্য এই ভাসমান হোটেল ভালো জায়গা। রাতে এখানে থাকি, দিনে ব্যবসা করি। আমাদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে টাকা না থাকলেও এসব হোটেলে থাকতে দেয় ম্যানেজাররা। পরে টাকা দিয়ে দিতে হয়। তবে আগে ভাড়া কম ছিল।’

শরীয়তপুর ভাসমান মুসলিম হোটেলের ম্যানেজার রমজান আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে মেজর শফিউল সাহেব এসব ভাসমান হোটেলের লাইসেন্স দিয়েছিলেন। এখন বিআইডব্লিউটিএ'র অধীনে আছে। সাধারণত ঘাটের শ্রমিক, হকার ও ক্ষুদ্র ফল ব্যবসায়ীরাই এখানে থাকেন। এছাড়াও সদরঘাটের নৌপথে যাতায়াতকারী দরিদ্র মানুষ এখানে রাত যাপন করেন। তবে ব্যবসার অবস্থা আগের চেয়ে অনেক খারাপ।’

নিম্ন আয়ের ব্যবসায়ী যাদের পরিবার থাকে গ্রামে। তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এসব হোটেল। এত অল্প টাকায় ঢাকা শহরে থাকার জন্য আর ব্যতিক্রম কিছু নেই। ভাসমান হোটেল প্রতিদিন রাত ১২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। দুই তলা বিশিষ্ট  ভাসমান লঞ্চের হোটেলে মানুষ বেশি হলে থাকার জায়গা না হলে, অনেক সময় হোটেলের ছাদেও থাকার ব্যবস্থা থাকে এসব হোটেলে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর