সাত দিনে সাপের কামড়ে ২ জনের মৃত্যু, আহত ১৩

রংপুর, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর | 2023-09-01 19:21:09

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিষাক্ত সাপের কামড়ে রংপুরের মিঠাপুকুরের রাণীপুকুর ইউনিয়নে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। সাপের ছোবলের শিকার হয়েছেন আরও ১৩ জন। এখন সাপ আতঙ্কে দিন কাটছে ইউনিয়নের দশগ্রামের মানুষের।

জানা গেছে, গত শনিবার (২০ জুলাই) থেকে শুক্রবার (২৬ জুলাই) পযর্ন্ত এসব ঘঘটনা ঘটে। এছাড়া সাপের ছোবলে একটি ছাগল মারা গেছে।

শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে রানীপুকুর ইউনিয়নের ভক্তিপুর দোলাপাড়া গ্রামে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় হাছেন আলীর ছেলে সালাউদ্দিন (১৮) রোববার (২১ জুলাই) সকালে পাট ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। ওই দিন রাতেই তার মৃত্যু হয়।

সাপের কামড়ে মৃত ছাগল, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

এ ঘটনার তিনদিন পার না হতেই একই গ্রামে আলম মিয়ার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে রানা মিয়া রাতে ঘুমাতে গিয়ে নিজ ঘরে সাপের কামড়ের শিকার হয়। আক্রান্ত রানাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হলেও ভ্যাকসিনের অভাবে সুচিকিৎসার না হওয়ায় তারও মৃত্যু হয়।

এদিকে, গত সাত দিনে ভক্তিপুর দোলাপাড়াসহ খাপুর, চূহড়, গাচুয়াটারী গ্রামে তাজনগর, বিশ্বনাথ খাপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে অন্তত ১৩ জন সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে দোলাপাড়া গ্রামে লোকমান (৩৫), মৃত. রানা মিয়ার বাবা আলম মিয়া (৩৮), আব্দুর রউফ (৫২), জয়নাল আবেদীন (৬০), শফিকুল ইসলাম (২৫), বকুল মিয়া (৬০), চূহড় গ্রামের জিন্নাহ্ আলী (৫২), বিশ্বনাথ খাপুর গ্রামের রাশেদা বেগমের (৪০) নাম জানা গেছে। বাকিদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

আহতরা ইতোমধ্যে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও বিভিন্ন কবিরাজের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব গ্রামে এখন সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে।

খাপুর গ্রামের আতোয়ার রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘হঠাৎ করে গ্রামে ছোট বিষাক্ত কালো সাপের উপদ্রব বাড়ছে। গত সাত দিনে আশপাশের গ্রামের অন্তত ১৫ জন সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছে। গরু-ছাগলও নিরাপদ নয়। আজ (শুক্রবার) সকালে দোলাপাড়া গ্রামে একটা ছাগলও মারা গেছে।’

সাপের কামড়ে ছাগলের মৃত্যুতে আতঙ্কে গ্রামবাসী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

ভক্তিপুর দোলাপাড়া গ্রামের পল্লীচিকিৎসক গোলজার হোসেন বলেন, ‘সাপের আতঙ্কে গ্রামের মানুষ বাসা ছেড়ে বাইরে থাকছে। হাসপাতালে সাপের কামড়ের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন নাই, এ কারণে গ্রামের মানুষের মনের মধ্যে ভয় কাজ করছে।’

মৃত. রানা মিয়ার মা রানু বেগম ও বাবা আলম মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, হাসপাতালে সাপের কামড়ের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ নাই। ভ্যাকসিনের অভাবে তার ছেলের অকাল মৃত্যু হয়েছে। একটা ছোট কালো সাপকে বোতলে বন্দি করা হয়েছে। তবে ওই সাপটি কামড় দিয়েছে কিনা তারা জানে না।

ভক্তিপুর আবাসন গ্রামের নুরনাহার বেগম বলেন, ‘গত বছর সাপের কামড়ে এই গ্রামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। একটা গরুও মারা যায়। এ বছর আবারও সাপের উপদ্রব শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এই বিপদের সময় চেয়ারম্যান, মেম্বার কেউ আমাদের পাশে নাই।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর