রাজধানীর রামপুরা এলাকায় সড়কে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো-নামানোর প্রতিযোগিতা বন্ধ করে এবার নির্দিষ্ট স্টপেজে গাড়ি থামানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিভিন্ন পাবলিক পরিবহনের মালিক-চালকসহ সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার (২ আগস্ট) রামপুরা সহকারী পুলিশ কমিশনারের উদ্যোগে নির্দিষ্টস্থানে যাত্রী ওঠানো নামানো নিয়ে একটি বিশেষ আলোচনা সভায় এমন প্রতিশ্রুতি দেন চালকরা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রামপুরা হয়ে যাত্রাবাড়ি সায়দাবাদ মতিঝিল কিংবা অন্যান্য এলাকায় চলাচলকারী চালকেরা।
আলোচনা শেষে ডিএমপি (পূর্ব বিভাগ) রামপুরা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘আমরা বেশ কিছুদিন ধরে তাদের সঙ্গে বসার চেষ্টা করছিলাম। অবশেষে তাদের সঙ্গে বসে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত পেয়েছি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আর স্টপেজ ছাড়া কোথাও গাড়ি থামাবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তারা আইন মেনেই গাড়ি চালাবে। যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তুলবেন না। যাত্রীদের জন্য রাস্তায় অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চালকেরা। এ সময় মালিক পক্ষেরও বেশ কয়েকজন উপস্থিত থেকে চালকদের আইন মেনে গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে।’
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর। তবে এজন্য চালকদের পাশাপাশি যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। সবাইকে নিজের নিরাপত্তার বিষয় মাথা রেখে রাস্তায় চলাচল করা প্রয়োজন। আমরা সবাই মিলে এক সঙ্গে কাজ করলে অবশ্যই সড়কের শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হবে।’
আলোচনায় অংশ নেওয়া কয়েকজন চালক জানায়, ‘তারাও ট্রাফিক আইন মেনে চলতে চায়। তবে চালকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় চাইলেও অনেক সময় আইনের বাইরে কাজ করতে হয়। তবে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রত্যেকের মতামতের ভিত্তিতে এসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
এসময় পরিবহন মালিক পক্ষ থেকে যাত্রীদের থেকে সহায়তা চেয়েছেন তারা। তারা বলেন, ‘চালকদের সঙ্গে যাত্রীদেরও সড়কের বিভিন্ন আইন কানুন মেনে চলা উচিত। তারা নির্দিষ্ট স্টপেজে অপেক্ষা করলে গাড়িও স্টপেজে থামতে বাধ্য। তখন আর যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানো নামানোর প্রয়োজন হবে না।’
পুলিশের সঙ্গে চালকদের প্রকাশ্যে বসে এমন আলোচনা ইতিবাচকভাবে দেখছেন স্থানীয়রা। বনশ্রীর স্থানীয় বাসিন্দা এমরান সরকার বলেন, ‘পুলিশ চালকদের সঙ্গে এমন আলোচনার পাশাপাশি ছোট ছোট সেশনের মাধ্যমে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করলে আরও ভালো ফলাফল আসতে পারে। তাতে চালকরা সচেতন হবে এবং আইন মানায় আগ্রহী হয়ে উঠবে।’
প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সহকারী কমিশনার বলেন, ‘আমরা সবসময় চালকদের এসব বিষয়ে বিভিন্ন ধারণা দিয়ে থাকি। তবে প্রশিক্ষণের বিষয় নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে 'স্টপেজে বাস না থামার দায় যাত্রী-চালক উভয়ের?' এমন শিরোনামে সংবাদ পরিবেশন করে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম। এর প্রায় এক মাস পরে চালকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ডিএমপি ট্রাফিক পূর্ব বিভাগ।