সকালের গাড়ি ছাড়বে রাতে, মলিন মুখে ঈদযাত্রীরা

ঢাকা, জাতীয়

শাহরিয়ার হাসান, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-22 23:18:18

গত ৭২ ঘণ্টায় মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের কবলে পড়েছেন ঘরমুখী যাত্রীরা। ৫ ঘণ্টার পথ ২০/২২ ঘণ্টা পথে কাটিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন তারা। যেসব গাড়ি এখনও রাজধানী ছেড়ে যায়নি সেগুলো কখন ছাড়বে তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।

শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের বগুড়াগামী সকাল ৬টার বাস কল্যাণপুর বাস কাউন্টার ছেড়ে যাবে ১৪ ঘণ্টা পর রাত ১০ টায়। শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে শাহ ফতেহ আলী পরিবহন কর্তৃপক্ষ এমন ঘোষণা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু শাহ ফতেহ আলী পরিবহন নয়; হানিফ, এসআর, শ্যামলীসহ উত্তরবঙ্গগামী সব পরিবহনই শিডিউল সময়ের চেয়ে ৮-১০ ঘণ্টা পিছিয়ে দিচ্ছে শনিবারের সব বাসের যাত্রা।

হাসিমুখে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাস টার্মিনালে আসা ঘরমুখী যাত্রীরা কাউন্টারে এসেই বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। সঙ্গে থাকা শিশু ও ভারী গাট্টি-বোচকা নিয়ে বিপাকেও পড়েছেন তারা। অসহায় মুখে গাদাগাদি করে কেউ কেউ কাউন্টারে বসে পড়েছেন। আবার কেউ কেউ বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।

বগুড়াগামী শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের সকাল সাড়ের ৬টার বাস কখন ছাড়বে জানতে চাইলে পরিবহনটির কর্মকর্তা জামিল বলেন, যারা সকাল সাড়ে ছয়টার যাত্রী তাদের সন্ধ্যার পর যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। যাত্রীরা আমাদের ফোন করে তিন ঘণ্টা পর পর বাসের অবস্থান জানতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, সকাল সাড়ে ৬টায় যে বাসটি ছেড়ে যাবার কথা ছিল সেটা এখন বগুড়ার শেরপুরে অবস্থান করছে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। ওই বাস ঢাকায় এলে তবেই আমরা যাত্রীদের বাসে ওঠাতে পারব।

এমন ঘোষণায় বিবর্ণ হয়ে গেছে ঈদযাত্রীদের হাস্যোজ্জ্বল মুখগুলো। নিরাশ হয়ে কেউ কেউ বাসায় ফিরে গেছেন। অনেকে আশপাশে ঘোরাঘুরি করছেন কিংকর্তব্যবিমুখ হয়ে।

অন্যান্য বাস কাউন্টারে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। প্রত্যেকটা বাস ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে। আর যাত্রা শুরুর পরও পথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।

জানতে চাইলে রংপুরগামী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী রিংকু মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, আমি মেসে থাকি। বাসা থেকে বের হয়ে এসেছি বাড়ি যাবার উদ্দেশে। এখন ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে আবার মেসে ফিরে যাওয়া সম্ভব না। মেস বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় ৮-১০ ঘণ্টা কাউন্টারে কিভাবে সময় কাটাব? ঈদযাত্রা নরকযাত্রায় পরিণত হয়েছে!

অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটা ঈদে অব্যবস্থাপনার জন্য মানুষের ঈদের আনন্দ মাটি হয়ে যায়। সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ছাড়া এ সমস্যার সমাধান হবে না।

একইরকম অভিযোগ করেছেন হানিফ কাউন্টারের প্রায় সব যাত্রী। বগুড়ার যাত্রী আতিকুল ইসলাম বলেন, ঈদে মহাসড়কের ব্যবস্থাপনা নিয়ে শুধু লম্বা লম্বা কথা শুনি। বাস্তবতা কত জঘন্য যাত্রীরা তা হাড়ে হাড়ে টের পায়। মহাসড়ক ভোগান্তির মহাসাগর, কারও কোন ভ্রুক্ষেপ নাই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর