ছাগলের চামড়ার বিনিময় সাইকেলে ঢুকঢাক!

ঢাকা, জাতীয়

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-18 12:41:43

সিদ্দিক হোসেন বাড়িতে মিলাদের জন্য ঈদের আগের দিন খাসি জবাই করেছিলেন। সেই চামড়া বিক্রির জন্য খালাশপীর বাজারে চামড়া ব্যবসায়ী কাম সাইকেল মেকার বুদুয়ার কাছে নিয়েছিলেন।

পূর্ব পরিচিত বুদুয়া তাকে জানান, চামড়ার জন্য কোনো টাকা দিতে পারবো না ভাই। তুই যখন কষ্ট করে চামড়াটি বাজার পর্যন্ত বয়ে এনেছিস, কোনো দিন সাইকেলের সমস্যা হলে, আনিস। আমি ফ্রি ঢুকঢাক করে (হাতুড়ির বাড়ি দিয়ে) দেবো। অবস্থা বেগতিক বুঝে আর বাক্য ব্যয় করেননি সিদ্দিক হোসেন। চামড়া রেখে কেটে পড়েছেন।

ঘটনাটি ছিলো ঈদের আগের দিনের। ঈদের দিনও ছাগলের চামড়ার কোনো ক্রেতার দেখা মেলেনি। আতোয়ার হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও রঞ্জু মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানিয়েছেন তারা ক্রেতা না পেয়ে চামড়া মাটিতে পুতে ফেলেছেন। ফ্রি দিতে গেলেও নাকি অনেকে নিতে রাজি হন নি।

আরও পড়ুন: রাজধানীতে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ শুরু

আর গরুর কাঁচা চামড়া বিক্রি হচ্ছে পানির দরে। আশি হাজার টাকায় কেনা গরুর চামড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ২০১৬, ২০১৭ সালে এমন গরুর চামড়া বিক্রি দুই থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৮০০ থেকে দেড় হাজার টাকা।

গ্রামাঞ্চলে চামড়া বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো হিসেব বা সূত্র মেনে চলা হয় না। সরকার যে ৪৫ টাকা বর্গফুট দর বেধে দিয়েছে তার ধারের কাছেও কেউ নেই। চোখের আন্দাজে চলে বেচাকেনা। ফড়িয়ারা এসে চোখে দেখে দর হাঁকছেন, এরপর  এক দুই দরে বেচাকেনা হচ্ছে।

অতীতে ফড়িয়ারা চামড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ আগ্রহ দেখাতেন। কিছুটা কমদামে চামড়া ছাড়ার জন্য অনেক ক্ষেত্রে জোরাজুরি করতেন। নানা রকম কৌশল প্রয়োগ করতেন। এবার কিন্তু তেমনটা লক্ষ্যণীয় নয়। ফড়িয়ারা এসে দর হাঁকিয়ে চলে যাচ্ছেন। অনেকটা এমন দিলে দেবেন না হলে নাই।

ফড়িয়াদের এমন অনাগ্রহের কারণে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেকের গরুর চামড়া অবিক্রিত থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ করে যারা একটু বেশি দামের আশায় ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর