কর্ণফুলীর ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে ভরাট হবে বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়

, জাতীয়

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম | 2023-08-28 17:15:44

চট্টগ্রাম: ২০১৩ সালে রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের। দেশের প্রথম ও এশিয়ার তৃতীয় মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসে আসার পথ সুগম হচ্ছে।

দেশের লাইফ লাইনখ্যাত কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে ভরাট করা হবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৬ একরের স্থায়ী ক্যাম্পাস। সদরঘাট থেকে সাত কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া হবে ড্রেজিংয়ের মাটি। আর সেই মাটিতে ভরাট হবে হামিদ চর, গড়ে উঠবে মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়টি।

কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার কথা জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চীফ হাইড্রোগ্রাফার আরিফুর রহমান বলেন, ‘কর্ণফুলী ড্রেজিংয়ের মাটি হালদার চর ও বাকলিয়ার চর এলাকায় জমা করা হবে। বাকলিয়ার চর এলাকায় বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি করা হবে। সেই স্থানটি কর্ণফুলী ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে ভরাট করার কথা রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘২৪২ কোটি টাকায় আগামী এক বছরের মধ্যে সদরঘাট থেকে বাকলিয়ার চর পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২৫০ মিটার চওড়া এলাকাটি সমুদ্র সমতল (মিন সি লেভেল) থেকে চার মিটার গভীর করা হবে। এতে এই এলাকা থেকে প্রায় ৪৩ লাখ ঘনমিটার মাটি উত্তোলন করার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সমীক্ষা অনুযায়ী এই পরিমাণ মাটি উত্তোলনের বিষয়টি নির্ধারণ করে দেয়। এসব মাটি দিয়ে সবার আগে ভরাট করা হবে বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। এরপর হালদার চর এলাকায়ও মাটি ভরাট করা হবে।’

তিনি আরো বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে এই নদীর ড্রেজিংয়ের কার্যক্রম শেষ হবে। পরবর্তী তিন বছর চলবে মেইনটেনেন্স কার্যক্রম ।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে কর্ণফুলী নদী ড্রেজিংয়ের কথা বলা হলেও বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ থেকে ডিপিএম (সরাসরি সংগ্রহ পদ্ধতি) পদ্ধতিতে কর্ণফুলী নদী ড্রেজিংয়ের কাজ করছে। তবে এই ড্রেজিংয়ের কাজটি করবে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও ই ইঞ্জিনিয়ারিং। গত ৫ মে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ১৪ দিনের মধ্যে কাজ শুরুর কথা। সেই অনুযায়ী কর্ণফুলীতে চলছে ড্রেজিংয়ের পাইপ বসানোর কাজ, ইতিমধ্যে চীন থেকে এসেছে সাফির-১ ও মিথাইল-১ নামের ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি ড্রেজার।

জানা যায়, ১০৬ একর জায়গার উপর ৯৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ডিপিপি অনুমোদিত হলেই প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শুরু হবে। আগামী ২০২১ সাল নাগাদ প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে প্রকল্প সংলগ্ন খালে একটি কালভার্ট ও কালুরঘাট শিল্প এলাকার সড়কটির আধুনিকায়ন করবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নদী, উপকূলীয় ও মহাসাগরীয় আইন এবং প্রকৌশলের উপর ৭টি অনুষদের অধীনে ৩৮টি বিভাগ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে মালয়েশিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখে চলে যাওয়ার পলি জমে ভরাট হতে থাকে কর্ণফুলী। পরবর্তীতে ডিপিএম (সরাসরি সংগ্রহ পদ্ধতি) পদ্ধতিতে খননের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর