পানি প্রবাহ কনভেনশনে অনুসমর্থনের পরামর্শ

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 18:18:07

জাতিসংঘের পানি প্রবাহ কনভেনশনে বাংলাদেশকে অনুসমর্থন দিতে পরামর্শ দিয়েছেন গোলটেবিল বৈঠকের বক্তারা। পানি প্রবাহ কনভেনশনের ফলে আন্তঃসীমান্তীয় নদীগুলোর ক্ষেত্রে কোন দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সে ক্ষেত্রে প্রতিকার চাইতে পারবে।

বিশ্ব নদী অধিকার দিবস (১৭ আগস্ট) উপলক্ষে রাজধানীর লালমাটিয়ায় এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ পরামর্শ দেন।

বক্তারা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন গত ১ জুলাই দেশের সব নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে একটি রায় দিয়েছেন। এর ফলে ভাটির দেশ হিসেবে একটি স্বীকৃতি পাওয়া গেছে। যদি জাতিসংঘের পানি প্রবাহ কনভেনশনে বাংলাদেশ অনুসমর্থন দেয় তাহলে অধিকার চাওয়া পূর্ণতা পাবে।

১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক পানি প্রবাহ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আয়োজক ছিল জাতিসংঘ। এই কনভেনশনে সিদ্ধান্ত হয়েছিল একটি আইন প্রণয়নের। কনভেনশনে সেই আইনটিও প্রস্তুত করা হয়। শর্ত থাকে, জাতিসংঘভুক্ত ৩৫টি দেশের অনুসমর্থন পাওয়া গেলে আইনটি চূড়ান্ত হবে। জাতিসংঘভুক্ত দেশের জন্য তা কার্যকর হবে।

১৯৯৭ সালের পর ৩৫টি দেশের অনুসমর্থন পাওয়ার জন্য প্রায় ১৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ৩৪টি দেশ অনুসমর্থন দেওয়ার পর দীর্ঘদিন আইনটি অনুসমর্থন পাওয়ার অপেক্ষায় ঝুলে ছিল। ৩৫তম দেশ হিসেবে ভিয়েতনাম আইনটির জন্য অনুসমর্থন দেয়।

কনভেনশনে উল্লেখ করা হয়েছিল, ৩৫তম দেশ অনুসমর্থন করার অব্যবহিত ৯০ দিন পর তা আইনে পরিণত হবে। সেই বিধান অনুযায়ী ২০১৪ সালের ১৭ আগস্ট আন্তর্জাতিক পানি প্রবাহ কনভেনশনে গৃহীত আইন প্রয়োগ উপপযোগী হয়ে ওঠে।

তবে এখনও বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল আন্তর্জাতিক পানি প্রবাহ কনভেনশনে সমর্থন জানায়নি। এই সমর্থন দিলে বিশেষত আন্তঃসীমান্তীয় নদীগুলোর ক্ষেত্রে কোন দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা প্রতিকার চাইতে পারবে। তবে প্রতিকার চাওয়ার আগে তাদের অনুসমর্থন দেওয়ার প্রয়োজন হবে।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন গত ১ জুলাই দেশের সব নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে একটি রায় দিয়েছেন। এ রায় অনুযায়ী জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে নদীর অভিভাবক ঘোষণা করা হয়েছে। আইনগতভাবেও নদী রক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তরা বলেন, নদী বাঁচাতে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। এ জন্য পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক বাজারে আনতে হবে যাতে এটি মাটির সঙ্গে মিশে যায়। নদীর প্রবাহ চালু রাখতে শীতকালে উজানের দেশ পানি আটকে রাখতে পারে না।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন, জল ও পরিবেশ ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান ম. ইনামুল হক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য তোফায়েল আহমেদ, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান, রিভারাইন পিপল-এর পরিচালক মোহাম্মদ এজাজ, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের সভাপতি মো. মনির হোসেন, নোঙ্গরের চেয়ারম্যান শামস্ সুমন প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর