ভরদুপুরে বড় আম বাগানের খুঁজে শিবগঞ্জের এক বাগান থেকে আরেক বাগানে যখন পা ফেলছি। মদন মিয়ার বাগান নামে পরিচিত সুবিশাল এক বাগানে গিয়ে হিরো আলমের দেখা। সেটি চাঁপাই থেকে শিবগঞ্জে যাওয়ার পথে রাস্তার ধারেই। বাগান এতই বিস্তৃত যে শেষ কোথায় হয়েছে সেটি দেখা যাচ্ছে না। আরও হাঁটতে হবে।
এ বাগানে ডালে ডালে ঝুলে আছে আম। আর দিন চারেক পার হলেই এ বাগানের গুটি আম উঠবে কানসাটের আমবাজারে। কোনো কোনো গাছ আমের ভারে মাটি ছুঁইছুঁই।
মদন মিয়ার এ পুরো বাগানটি ১১ লাখ টাকায় কিনেছেন মো আলম। কিনেছেন আশেপাশের আরও কয়েকটি।
১৫ থেকে ১৬ বছর আগে মাত্র দেড় হাজার টাকা দিয়ে আমের ব্যবসায় নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে প্রথম লাভ পেয়েছিলেন সাড়ে ৭ হাজার টাকা। তার সঙ্গে আরও কিছু টাকা জোগাড় করে ১৮ হাজার টাকা দিয়ে যৌথভাবে বাগান কিনলেন।
ওই বার পুরো ১৮ হাজার টাকাই জলে গেলো। বিরুপ আবহাওয়ায় আমে লাভ হয়নি।
একপর্যায়ে আয় থেকে একটি ট্রাক্টর কিনলেন। বছরের অন্য সময় ট্রাক্টর চালান কিন্তু জৈষ্ঠ্য মাসে পুরদস্তর আমের ব্যবসা।
ছয় বছর থেকে মদন মিয়ার পুরো বাগানের ৮ শতাধিক ঝাড় কিনে ব্যবসা করেছেন তিনি। প্রথম চার বছর লাভ দেখেননি। গত দুই বছর থেকে লাভ আর লাভ। আমের ব্যবসার লাভ থেকে জায়গা কিনে বাড়ি করেছেন। এক ছেলে হাইস্কুলে আর মেয়ে পড়ছে নার্সিং কলেজে। ব্যাংকে একাউন্ট খুলে টাকাও জমা রাখছেন।
সাইকেল চালিয়ে এ বাগান থেকে ও বাগানে এখন ঘুরছেন। আকাশ কালো হলে বুক ধড়ফড় করে তার। গেল বিকেলের বাতাসে দৌড়ে এসেছিলেন বাগানে। বাগান ঘিরেই যত স্বপ্ন আর সম্পদ।
আমের রাজধানী চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ এলাকার বেশিরভাগ আমচাষীদের গল্প এমন। যাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে আমে।