মিল্ক ভিটায় উৎপাদিত দুধসহ দেশের তরল দুধের গুণগত মান নিয়ে একটি কুচক্রী মহল সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্ক ভিটা)। হীন স্বার্থ হাসিলের জন্য এমন অপপ্রচারের কারণে সুনাম নষ্ট হওয়ায় মিল্ক ভিটার দুধ বিক্রি কমেছে বলেও জানিয়েছে তারা।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দুধের গুণগত মান বজায় রাখতে দীর্ঘ মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মিল্ক ভিটার কার্যক্রমসহ দেশের দুধের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, ওমর ফারুক চৌধুরী, ইসমাত আরা সাদেক, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, মির্জা আজম, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মো. জিল্লুল হাকিম এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, মিল্ক ভিটার ছয়জন শীর্ষ কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে দেশের তরল দুধ নিয়ে একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরা হয়। সেখানে গুঁড়া দুধ নিয়েও অপপ্রচার চলছে বলে দাবি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মিল্ক ইউনিয়ন কর্তৃক যথাযথ গুণগতমান সম্পন্ন গুঁড়া দুধ বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জ্য রেখে উৎপাদন করলেও বিদেশি গুঁড়া দুধের আমদানি শুল্ক কম থাকায় মিল্ক ইউনিয়নের গুঁড়া দুধ আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। আর বিগত চার বছর যাবৎ ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে এই শিল্পে সরকারি ভর্তুকি দেওয়ায় গুঁড়া দুধের উৎপাদন অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শেষে কমিটির সদস্যরা দেশীয় দুগ্ধ শিল্প রক্ষায় সব ধরনের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে এ শিল্পে কোনো ঘাটতি থাকলে তা পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেগ নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ সাংবাদিকদের বলেন, দেশীয় দুগ্ধ শিল্পের সঙ্গে হাজার হাজার খামারি জড়িত। কিন্তু এই বিকাশমান শিল্প নিয়ে বর্তমানে নানা ধরনের মন্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। অথচ এগুলোর তেমন কোনো ভিত্তি নেই। এটি দেশীয় শিল্প ধ্বংসের পাঁয়তারা কিনা তা খতিয়ে দেখার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুধের গুণগত মান নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও মিল্ক ভিটার সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের ভুল থাকলে তা সংশোধনের সময় দিতে হবে। কিন্তু অবৈজ্ঞানিক তথ্য নিয়ে ব্যবসার ক্ষতি করা ঠিক হবে না। তাই মিল্ক ভিটাতে কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি থাকলে তা প্রতিকারের জন্য পদক্ষেপ নিতে বৈঠকে সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়িতে মিল্ক ভিটার দুগ্ধ কারখানা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংসদীয় কমিটি।