রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই হোক না কেন সবার একটা জায়গায় এক হওয়া দরকার, সেটা হলো—মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। এখানে কোন আপোষ হওয়া চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, আমরা চাই স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা যেন কোনভাবে বাংলাদেশে প্রশ্রয় না পায়। আমরা সবাই মিলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করব।
সোমবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ প্রাঙ্গণে আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ শান্তি, সৌহার্দ্যে ও সহাবস্থানের একটা রাষ্ট্র হিসেবে থাকুক। এখানে অপরাধ হবে না, কেউ অপরাধ করলে অপরাধীর বিচার হবে। কোন অপরাধীকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে না, প্রটেকশন দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীন সত্তার অভ্যুদয় অনেকে মেনে নিতে পারেনি। তাই ’৭১ থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত অনেক বড় বড় রাষ্ট্র এ ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকে গ্রহণ করেনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর অনেক কিছু বদলে গেল। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ হয়ে গেলো, ‘বাংলাদেশ বেতার’ ‘রেডিও বাংলাদেশ’ হয়ে গেলো, ঢাকা এয়ারপোর্টের গেটে ‘স্বাগতম’ সম্ভাষণ হয়ে গেলো ‘আহলান সাহলান’। পকিস্তানি পাসপোর্টধারী গোলাম আযমকে বাংলাদেশে পাকিস্তানের পাসপোর্টসহ আসতে দেওয়া হলো। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদকে ক্ষত-বিক্ষত করে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হলো। বেনামে জামায়েত ইসলামকে এ দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হলো। শাহ আজিজ, মশিউর রহমান যাদু মিয়া, মাওলানা আব্দুল মান্নান, জয়পুরহাটের আব্দুল আলীম, খান এ সবুরকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করা হলো। যারা বাংলাদেশ চাননি এবং লুকিয়ে ছিলেন তারা বেরিয়ে আসার সুযোগ পেলেন। যারা দেশের বাইরে ছিলেন তাদের দেশে আসার সুযোগ করে দেওয়া হলো। গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলো।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদেরদের মতো ব্যক্তিদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে বাংলাদেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্বে শহিদের রক্তখচিত পতাকাকে চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করে দিলেন। এভাবে জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশের অর্জিত স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া হয়েছিল। এরশাদ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাংলাদেশ এনে সংসদে আসার সুযোগ করে দিলেন। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. রাশিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আখতার হোসেন, রাজউক চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাহাদাত হোসেন বক্তব্য রাখেন।