ওসির বিরুদ্ধে শ্রমিক নেতা হত্যার এজাহার বদলের অভিযোগ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী | 2023-08-31 23:24:38

আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে বাঁচাতে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার বদল করার অভিযোগ করেছেন নিহতের কন্যা ও মামলার বাদী নিগার সুলতানা।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহীর মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

নিগার সুলতানা জানান, গত ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন পুঠিয়া শাখার নির্বাচনে তার বাবা নুরুল ইসলাম বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে ক্ষমতার জোরে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাকিল উদ্দীন আহমেদ, ওই নির্বাচন কমিশনের কমিশনার আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক এবং মাসুদ তার বাবাকে পরাজিত দেখান। এ ঘটনায় তার বাবা নুরুল ইসলাম আদালতে মামলা করেন।

তিনি আরও জানান, গত ১০ জুন আদালত নবনির্বাচিত কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা করেন। ওই কাগজ শ্রমিক অফিসে জমা দিতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ, ফারুক ও মিঠু তার বাবাকে হত্যার হুমকি দেন। ওই দিন রাতেই তার বাবা নুরুল ইসলাম নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে তার বাবার মরদেহ পাওয়া যায় পুঠিয়া সদরের একটি ইটভাটায়। এঘটনায় তিনি আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ, ফারুক, মিঠু, শ্রমিক নেতা আব্দুর রহমান পটলসহ আটজনের বিরুদ্ধে পুঠিয়া থানায় হত্যা মামলার একটি এজাহার দেন। কিন্তু পরে দেখেন যে তার দেওয়া এজাহারের সঙ্গে থানায় দাখিলকৃত এজাহারের মিল নেই।

মামলার বাদী নিগার বলেন, ‘ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্টসহ বিভিন্ন কাজের কথা বলে বেশ কিছু সাদা কাগজে তার স্বাক্ষর নিয়েছিলেন ওসি সাকিল উদ্দীন। পরে তিনি এজাহার বদল করে তার স্বাক্ষর করা কাগজে নিজের মতো লিখে এজাহার হিসেবে চালিয়ে দেন। তাতে মাসুদ ও ফারুকের নাম আসামি হিসেবে রাখা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ এ হত্যাকাণ্ড ভিন্নখাতে নিতে জীবন (১৪) নামের এক কিশোরকে আটক করে নির্যাতন চালিয়ে তার স্বীকারোক্তি নিয়েছে। তার মুখ থেকে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয় সমকামিতার কারণে ওই কিশোর তার বাবাকে হত্যা করেছে।’

নিগার দাবি করেন, কিশোর জীবনের পক্ষে একা তার বাবাকে হত্যা করা সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জীবনের মা কাঞ্চন জানান, তার কিশোর সন্তানকে পুলিশ ব্যাপক নির্যাতন করে এই স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করেছে। সে তার মাকে বলেছেন, নুরুল ইসলাম তার নানা। সে তার নানাকে হত্যা করেনি। এই স্বীকারোক্তি দিতে পুলিশ তার ওপর চরম নির্যাতন করেছে। তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নিগার দাবি করেন, তাদের পক্ষে কাজ করায় শরিফুল ইসলাম নামের শ্রমিক ইউনিয়নের এক সদস্যর পা ভেঙে দিয়েছে মাসুদের ক্যাডার বাহিনী। এছাড়া তাদের পক্ষে কাজ করায় ব্যারিস্টার আবু বাক্কার সিদ্দিক রাজন নামের এক আইনজীবিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। মঙ্গলবার সেই মামলায় রাজশাহীর আদালতে হাজিরার দিন ছিল ব্যারিস্টার রাজনের।

নিগার সুলতানা এহত্যাকাণ্ডের ন্যায্য বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া থানার ওসি সাকিল উদ্দীন বলেন, ‘এজাহার বদলের কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিগার সুলতানার স্বাক্ষরের প্রমাণ পুলিশের কাছে রয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর