ভাঙা সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

ময়মনসিংহ, জাতীয়

উবায়দুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ময়মনসিংহ | 2023-08-24 23:24:21

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের পোড়াবাড়ি বাজারে খিরু নদীর ওপর নির্মিত সেতুর বেহাল দশা। প্রায় ৪০ বছর আগে তৈরি হয়েছে সেতুটি। বয়সের ভারে আজ জীর্ণদশা সেতুটির। বইতে পারছে না যানবাহনের ভার। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভারী যানবাহন চলাচল করায় কদিন আগেও ভেঙে গেছে কয়েকটি পাটাতন। এতে সেতুটিতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এমন অবস্থায় অপেক্ষা করছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

স্থানীয়রা বলছেন, নির্মাণের পর বড় কোনো সংস্কার না করে দায়সাড়াভাবে বছর বছর ভেঙে যাওয়া পাটাতনগুলো মেরামত করা হয়। জোড়াতালির এই সেতুটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, ত্রিশাল-ফুলবাড়ীয়াসহ উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের পোড়াবাড়ী বাজারের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া খিরু নদীর ওপর ১৯৮২ সালে নির্মাণ করা হয় ২৪২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট এই সেতুটি। নির্মাণের এক যুগ পেরুতেই সেতুর অনেকগুলো পাটাতনে মরিচা ধরে ভেঙে পড়তে শুরু করে। বিভিন্নস্থানে ভাঙা থাকার কারণে গত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া ছোট-বড় দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন।

স্থানীয় পোড়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘খিরু নদী পারাপারের একমাত্র পথ এ সেতুটি। এ অঞ্চলের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে হয়। কিন্তু এ সেতুটির দিকে কেউ সুনজর দেয় না।’

 



জুলিয়া জুলি নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই এ ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করি। সেই সময় ব্রিজটি যে অবস্থায় ছিল এখনো ঠিক একই অবস্থাতেই আছে। পারাপার করতে গেলে সবসময় মনে হয় কখন যেন ব্রিজটি ভেঙ্গে নিচে পড়ে যাই। এমন শঙ্কা নিয়েই সবাইকে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। দ্রুত এটি পুণঃনির্মাণ না করা হলে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’ 

স্থানীয় আবুল হাসেম নামের এক ব্যক্তি জানান, কয়েক বছর আগে সেতুটি দিয়ে হেঁটে পার হওয়ার সময় পাটাতন ভেঙে নদীতে পড়ে গিয়ে মারাত্মক আহত হয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আছিম গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন। সেই দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করে তিনি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 



এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল জাকির বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘ব্রিজটি পরিদর্শন করে সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য সাময়িকভাবে আমরা সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছি। এছাড়াও ইতোমধ্যে ডিসি অফিস থেকে নতুন ব্রিজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ছবিসহ প্রতিবেদন পাঠানো হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যও ডিও লেটার দিয়েছেন। আশা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যে এখানে নতুন ব্রিজের কাজ শুরু হতে পারে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর