৫০০ টাকার দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ, দুই পরিবারে আহত ১০

রাজশাহী, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী | 2023-08-26 21:56:19

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের দুই প্রতিবেশী একরামুল হক (৫০) ও সাদিকুল ইসলাম (৪৫)। কোরবানির ঈদের আগে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে ঢাকায় একসঙ্গে কাজ করতে যান একরামুলের ছেলে খাইরুল ইসলাম (২৮) ও সাদিকুলের ছেলে সজীব হোসেন (২০)। ঈদে বাড়িতে ফেরেন দু’জন একসঙ্গে।

তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাদিকুলের ছেলে সজীবকে ৫০০ টাকা কম দেয়। এনিয়ে সজীব একরামুলের ছেলে খাইরুলকে দায়ী করে। বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। ঈদের পর থেকে প্রায়ই প্রতিদিনই ছোট ছোট বিষয় নিয়ে ঝগড়া লাগে দুই পরিবারের সদস্যদের মাঝে। ঝগড়ার কেন্দ্রে থাকে সজীবের ৫০০ টাকা কম পাওয়া!

সবশেষ গত ২০ আগস্টও দুই পরিবারের মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই ৫০০ টাকা কম পাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে রূপ নেয়। ঝগড়া থেমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফেরেন সজীবের বাবা সাদিকুল ইসলাম। ঝগড়ার খবর শুনে তিনি প্রতিবেশী একরামুলের বাড়িতে হামলা চালান। সঙ্গে তার স্ত্রী সুমি খাতুন (৩৫), ছেলে সজীব ও রায়হানও যায়।

তারা অতর্কিতভাবে একরামুলের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও বাড়ির সব সদস্যদের মারপিট করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। যাতে একরামুলের পরিবারের সকল সদস্য আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আহতরা হলেন- একরামুল হক (৫০), তার ছেলে খাইরুল ইসলাম (২৮), মাজহারুল ইসলাম (২৪), মো. নয়ন (২০), পিয়ারুল ইসলাম (১৮) এবং নয়নের স্ত্রী রুবিনা খাতুন (১৮)। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে। একই সময়ে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেন সাদিকুল ইসলাম, তার স্ত্রী সুমি খাতুন, ছেলে সজীব ও রায়হান।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা দায়ের করতে যান। ঘটনা শুনে ওসি জাহাঙ্গীর আলম মামলা না নিয়ে দুই পরিবারকে আপোষ-মীমাংসা করে ফেলার নির্দেশ দেন। যাতে রাজি নয় একরামুলের পরিবার। তাদের দাবি- তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের দোষও কম।

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেদিন ‍দু’পক্ষে মারামারি হয়েছে। আমরাও তাদের মেরেছি, তারাও মেরেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে গায়ে খেটে টাকা আয় করছে, তা মেরে খাবে, এটা সহ্য করবো না। মীমাংসা করতে হলে ওই ৫০০ টাকা দিয়ে মীমাংসা করতে হবে।’

হামলার শিকার খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘ঠিকাদার কেনো সজীবকে ৫০০ টাকা কম দিয়েছে, সেটা আমিও জানি না। অথচ তারা আমাকে দোষারোপ করছে। এনিয়ে প্রতিদিন ঝগড়া করে। শেষ পর্যন্ত তারা আমার বাবা ও ভাইদের মারধর করেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। অথচ থানায় মামলা করতে গেলেও ওসি তা নেন নি।’ তার অভিযোগ পুলিশকে ঘুষ দিয়ে সাদিকুল ও তার ছেলে সজীব ম্যানেজ করে ফেলেছেন।

তবে গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ এমন অভিযোগ নিয়ে আসেনি। আসলে অবশ্যই মামলা গ্রহণ করে তদন্ত করে দেখা হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর