১৩ মাস পর ‘নিখোঁজ’ মা-মেয়ে উদ্ধার

, জাতীয়

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 01:16:45

 

দীর্ঘ ১৩ মাস ‘নিঁখোজ’ থাকার পর ৬ বছরের সন্তানসহ উদ্ধার করা হয়েছে হত্যা মামলার ভিকটিম এক নারীকে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা স্টিল মিল বাজারের টিএসপি গেইট এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেন্টিগেশন (পিবিআই)।

উদ্ধার নারীর নাম সেতারা বেগম (২২)। কক্সবাজারে তার স্বামীর বাড়িতে তাকে খুন ও গুম করা হয় বলে অভিযোগ ছিল।

পিবিআই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ২০১১ সালের ২২ জুলাই কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বড়ইতলী ইউনিয়নের ভিলেজারপাড়া এলাকার নবী হোসেনের মেয়ে সেতারা বেগমকে এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন একই এলাকার রফিকুল ইসলাম। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে তিনি সেতারা বেগমকে নানাভাবে নির্যাতন করেন। তাদের সংসারে নুসরাত জাহান মিতু নামে ছয় বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

মামুন আরও জানান, ২০১৬ সালের ৫ মে ব্যবসায়ের জন্য রফিকুল ইসলাম তার স্ত্রী সেতারা বেগমকে বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। সেতারা তার বাবাকে বিষয়টি জানান। কিন্তু হঠাৎ-ই তারা হারিয়ে যান। এদিকে নিজ সন্তান ও নাতনীকে না পেয়ে রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সেতারা ও তার সন্তান মিতুকে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগ এনে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন নবী হোসেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কক্সবাজার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। পুলিশ দীর্ঘ তদন্তকালে জানতে পারেন যে হত্যার পর গুম হওয়া সেতারা বেগম ও নুসরাত জাহান মিতু জীবিত রয়েছে। এরই অংশ হিসাবে চট্টগ্রামে টানা তিন দিন অভিযান চালিয়ে পতেঙ্গা স্টীল মিল বাজার এলাকার টিএসপি গেইট এর একটি ভাড়াবাসা থেকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।

আজ  শনিবার সকালে কক্সবাজার পিবিআই অফিসে উদ্ধার হওয়া সেতারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, যৌতুকের কারণে তার স্বামীর হাতে বরাবরই নির্যাতন হতে তিনি। এমনকি রফিকুলের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ব্যাপক মারধর করতেন তাকে। এই অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সবার অজান্তে গোপনে তিনি চট্টগ্রামে পালিয়ে যান। পরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ইপিজেড এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি নিয়ে ভাড়াবাসায় বসবাস করতে থাকেন তিনি।

সেতারা আরও জানান, তাকে ও তার সন্তানকে খুন করে গুম ও এ ঘটনায় মামলার বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না। এমনকি তার বাবার সঙ্গেও তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। ফিরে আসার ইচ্ছা থাকলেও কোনো ভাবে জানতে পারেন তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তাই আর ফেরেননি তিনি।

 পিবিআই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, ‘তদন্তে আরও কিছু কাজ বাকি আছে তবে শিঘ্রই সেতারা বেগম ও তার শিশু কন্যাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর