৬৬৪ পরীক্ষার্থীর ৪৩২ জনই ফেল, আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী | 2023-08-22 19:32:13

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের সংখ্যা ১৬টি। এর মধ্যে রাজশাহী জেলার ৫টি। কলেজগুলো থেকে ২০১৮ সালের বিএসসি ইন নার্সিং (বেসিক) প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৬৬৪ জন শিক্ষার্থী। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারিতে ওই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ফল প্রকাশ করা হয় ৯ জুন।

ফলাফলে দেখা যায়- ফেল করেছে ৪৩২ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ইয়ার লস হয়েছে ১০০ জন শিক্ষার্থীর। ভয়াবহ ফল বিপর্যয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়নে গাফিলতি ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। তারা ফলাফল রিভিউয়ের দাবি জানায়।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট ফলাফল রিভিউ করে রামেক কর্তৃপক্ষ। তাতে মাত্র ১৭ জন শিক্ষার্থী পাস করে। ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে ৪১৫ জনে দাঁড়ালেও ইয়ার লস শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও ১০ জন বেড়ে ১১০ জনে গিয়ে ঠেকে। যা নিয়ে ওই দিনই ফের আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। পরে দ্বিতীয় দফায় রিভিউয়ের পর ৬ আগস্ট আবারও ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও ৫ জন কমে দাঁড়ায় ৪১০ জনে। ইয়ার লস শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ জন কমে আবারও ১০০ জনে দাঁড়ায়।

ফলাফলের এমন পরিবর্তনে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা। তারা ঈদের আগে ৯ আগস্ট পর্যন্ত টানা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে। পরে ঈদের ছুটিতে কর্মসূচি স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা। ছুটি শেষে মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) থেকে ফের চার দফা দাবি সামনে নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে তারা।

বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রামেকের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করে তারা। এতে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ১০ শতাংশ গ্রেজ দিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু ভুল করেছে তাই সাবজেক্ট কমিয়ে ১০০ জন শিক্ষার্থীর ইয়ার লস বাঁচাতে হবে, ক্যারিঅন পদ্ধতি চালু করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুলের কারণে শিক্ষার্থীরা যে প্রতিবাদ করেছে তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনকে হুমকিতে না ফেলার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাদের ফলাফলে ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়েছে। তাই রিভিউ করলেও হেরফের হচ্ছে ফলাফলের। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন থেকে এক বছর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাদের। কারণ নার্সিংয়ে এক বছরে একজন শিক্ষার্থীর প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করতে হয়। যা সবার পরিবারের পক্ষে দেওয়া কষ্টসাধ্য।

জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের ডিন ড. জাওয়াদুল হক বলেন, 'তারা রিভিউয়ের দাবি করেছিল। আমরা দুই দফা রিভিউ করেছি। তারপরও তারা আন্দোলন করছে। এটা ঠিক নয়।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ করে নিজ প্রতিষ্ঠানে চলে যেতে বলেছি। যদি তাদের আরও দাবি থাকে তবে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লিখিতভাবে জানাতে হবে। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখব। এর বেশি কিছু করার নেই।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর