বৃষ্টিতে সবজির বাজারে আগুন, কমেছে ইলিশের দাম

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-30 18:22:34

বৃষ্টির প্রভাবে সরবরাহ কম থাকায় রাজধানীর কাঁচাবাজারে সবজি, মাছ ও মুরগীর দাম গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে। তবে সরবরাহ কম থাকলেও বিভিন্ন সাইজের ইলিশ মাছে কেজি প্রতি ১০০ টাকা কমেছে।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কারওয়ান বাজার ও রামপুরা বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে কেজি প্রতি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, পটল ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, কচু ৫০ টাকা, টমেটো ৮৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, কচুর মুখি ৫০ টাকা, শসা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫, রসুন (চায়না) ১৪০ টাকা, রসুন (দেশি) ১৪০ থেকে ১৫০, আদা ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।



এছাড়াও করলা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৪০ টাকা, কাঁচা কলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা হালি, জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লেবু ২০ থেকে ৩০ টাকা হালি, প্রতি পিস লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা পিস, ফুলকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে। আর গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে শিমের দাম এখন ১৫০ টাকা।

সবজি বিক্রেতা জুয়েল রানা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে বাজারে সরবরাহ গত সপ্তাহের চেয়ে অনেক কম। তাই সবজির দাম বেড়েছে। সব সবজিতেই কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে সরবরাহ কিছুটা ভালো ছিল, কিন্তু এ সপ্তাহে খুবই কম। আর শীতকালীন সবজির দাম অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে শিমের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫০ টাকা। এছাড়াও বেগুন, কাকরোল, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ অনেক সবজিরই দাম বেড়েছে।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন ক্রেতারা। দাম বাড়ানো নিয়ে অনেক ক্রেতাকেই বিক্রেতাদের সঙ্গে তর্কে জড়াতে দেখা গেছে।

বাজার করতে আসা এনজিও কর্মী শহিদুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, কোনো অজুহাত পেলেই ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেন। প্রত্যেকটা সবজি, মুরগিসহ দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে। কেন বেড়েছে জিজ্ঞেস করলেই বলছে বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কম, এটা আসলে একটা অজুহাত। তাদের এ অজুহাত নতুন নয়। গত সপ্তাহেও বলেছে সরবরাহ কম, তাদের সরবরাহ ভালো কবে থাকে সেটা তারাও জানেন না।’

সবজি বাজারে দাম বৃদ্ধি পেলেও ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকা কমেছে। বড় সাইজের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়, মাঝারি সাইজের ইলিশ মাছের কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়, ছোট সাইজের ইলিশ মাছের কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।

সরবরাহ কম থাকায় অন্যান্য মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। দাম বেড়ে রুই মাছ কেজি প্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় শিং মাছ ৭০০ টাকা কেজি, ছোট মাগুর ৬০০ টাকা কেজি, বড় চিংড়ি ৮০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা বাদল হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ইলিশ মাছ ছাড়া সব ধরনের মাছেই দাম কিছুটা বেড়েছে। মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। তবে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও অনেক মাছ স্টকে ছিল, সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা কম। শুক্রবার যেমন ক্রেতা থাকে আজ তেমন নেই, বৃষ্টির কারণেই হয়তো ক্রেতারা কম আসছেন।

ডিমের ডজন গত সপ্তাহের মতোই ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। সাদা ব্রয়লার মুরগির দাম কেজি প্রতি ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আকার ভেদে হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে।

মাংসের মধ্যে গরু মাংস ৫৫০, খাসি ৮০০ ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। দেশি মুরগি (৮০-৮৫০ গ্রাম) ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি এক কেজি ওজনের ২৩০ টাকা ও ৮০০ গ্রাম ওজনের মুরগি ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি বিক্রেতা মো. তারেক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগির দাম কয়েকদিন ধরে ধাপে ধাপে বেড়েছে। পরশু সাদা মুরগি ছিল ১৩০ টাকা, গতকাল ১৩৫ টাকা আর আজ তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। একইভাবে দাম বেড়েছে লাল মুরগিরও। সরবরাহ কম থাকায় মূলত দাম বাড়ছে। বৃষ্টির কারণেই মূলত মুরগির সরবরাহ কম।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর