ডিএনসিসির মাঠগুলো সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে অক্টোবর থেকে

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-23 21:57:30

মাদকমুক্ত দেশ গড়তে শিশুদের মাঠে আসার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘ডিএনসিসি এলাকার প্রায় ২৪টি মাঠ ও পার্কের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। আগামী অক্টোবর থেকে মাঠগুলো জনগণের হাতে হস্তান্তর করা শুরু হবে।’

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানী এক নম্বর সড়কে অবস্থিত খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন শেষে মেয়র এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি যায়ান চৌধুরীর নামে মাঠটির নাম দেওয়া হয়েছে শহীদ যায়ান চৌধুরী খেলার মাঠ।

গত এপ্রিলে শ্রীলংকায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শিশু যায়ান চৌধুরী এ মাঠে খেলত, এখানেই তার বেড়ে ওঠা। তার স্মৃতিকে ধরে রাখতে যায়ান চৌধুরীর নামে নতুনভাবে সাজানো হবে মাঠটি। ডিএনসিসির তত্ত্ববধানে মাঠটি সংস্কার করবে এস এম কনস্ট্রাকশন। মাঠ উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ কোট ১৯ লাখ ১৭ হাজার ১৭০ টাকা। আর প্রকল্পের মেয়াদকাল চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে ২০২০ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত।

a
শহীদ যায়ান চৌধুরী মাঠের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডিএনসিসি প্রায় ২৪টি মাঠ-পার্কে এরই মধ্যে উন্নয়ন কাজ শুরু করেছে। আগামী অক্টোবর থেকে একটি একটি করে মাঠ-পার্ক জনগণের জন্য খুলে দিতে শুরু করব। আজ যে মাঠের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করলাম, এটির কাজ ২০২০ সালে মুজিব বর্ষের আগেই শেষ হবে। এলাকার সবাইকে নিয়ে মুজিব বর্ষ শুরু হওয়ার আগে মাঠটি উদ্বোধন করতে চাই। কিন্তু এ মাঠের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

‘এ মাঠে আধুনিক মানের ক্রিকেট পিচ থাকবে। ফুটবলের জন্য আলাদা খেলার জায়গা থাকবে। শিশুদের জন্য আলাদা প্লেইং জোন থাকবে। এখানে বয়স্কদের জন্য হাঁটার ব্যবস্থা থাকবে। পাবলিক টয়লেটসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে। রাতে পর্যাপ্ত লাইটিং থাকবে, যেন স্থানীয়রা কর্মস্থল থেকে ফিরে হাঁটতে পারেন,’ যোগ করেন মেয়র।

a
নিহত যায়ান চৌধুরী, ছবি: সংগৃহীত 

 

ডিএনসিসি এলাকায় এডিস নিয়ন্ত্রণে ফের চিরুনি অভিযানের ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, ‘রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে ডিএনসিসি এলাকায় দ্বিতীয় ধাপে চিরুনি অভিযান শুরু হবে।’

এজন্য তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সবার সহযোগিতা চান। এছাড়া আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযানে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা চান তিনি।

অনুষ্ঠানে শেখ সেলিমের নাতি যায়ানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘এটি বেদনাদায়ক অনুষ্ঠান। এ মাঠে যে শিশুটি খেলত, তার নাম যায়ান চৌধুরী। নিষ্পাপ যায়ান প্রতিহিংসার শিকার। ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িকতার বাড়াবাড়িতে তাকে জীবন দিতে হয়েছে। সে কারো ক্ষতি করেনি। এ রকম আরো অনেক শিশু জীবন দিয়েছে। তাদের কেউ কেউ একদিন দেশের ভবিষ্যৎ নেতা হতো।’

a
মাঠটি যেমন হবে, ছবি: সংগৃহীত

 

শিশু হত্যা এটিই প্রথম না। ১৯৭৫ সালে শিশু রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে, সুকান্তকে হত্যা করা হয়েছে। যারা এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটায়, তারা মানবতার শত্রু, ধর্মের শত্রু। তারা ধর্ম মানে না, আল্লাহকে মানে না। ভবিষ্যতে যেন আর কোনো শিশুকে এভাবে জীবন দিতে না হয়, সেজন্য সবাইকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ড. তারিক বিন ইউসুফ, যায়ান চৌধুরীর বাবা মশিউল হক চৌধুরী, দাদা মতিনুল হক (এমএইচ) চৌধুরী, স্থানীয় কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, স্থপতি ইকবাল হাবিবসহ অনেকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর