ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক এডিস মশার বিরুদ্ধে এবার ফাইনাল খেলায় নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) এডিস ধ্বংসে দ্বিতীয় দফার চিরুনি অভিযান উদ্বোধনকালে মেয়র আতিকুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মশার লার্ভা ধ্বংস এবং পরিচ্ছন্নতার লক্ষ্যে চিরুনি অভিযানের প্রথম পর্যায় ছিল সেমিফাইনালের অংশ। আজ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের চিরুনি অভিযান শুরু হলো, এবার হবে ফাইনাল।’ রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দুই নম্বর গেট থেকে এ চিরুনি অভিযান উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় মেয়র বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে অনেক বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ার পরও ছাড় দেওয়া হয়েছে। এবার আর কোনো ছাড় নয়, এবার হবে জরিমানা। আমরা প্রথম পর্যায়ের অভিযানে প্রায় ৬৫ হাজার বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পেয়েছিলাম। তখন সেসব বাড়িতে স্টিকার লাগানোসহ তাদের সাবধান করে আসা হয়েছিল, বলা হয়েছিল এসব বাড়িতে আমরা আবার যাব, আর তখন যদি লার্ভা বা জমে থাকা পানি অথবা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা জরিমানা করব। আজ থেকে আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের চিরুনি অভিযান শুরু করলাম। এবার আর কোনো মাফ নেই, এবার সবাইকে জরিমানার আওতায় আনা হবে। প্রথম বার ছিল সেমিফাইনাল, এবার হবে ফাইনাল অভিযান।’
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা এ শহরটাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে চাই, কিন্তু এ কাজ শুধুমাত্র সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য প্রতিটি নাগরিকের সহযোগিতা প্রয়োজন। জনগণ একটু সচেতন হলেই এটা করা সম্ভব হবে। এ চিরুনি অভিযানে আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি ভাগে ভাগ করে পরিচ্ছন্নতা এবং এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে কাজ করব। এছাড়া ওই ১০ ভাগকে আবার ১০টি সাব ভাগে ভাগ করে মোট ৩৬০টি ব্লকে আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের চিরুনি অভিযান শুরু করেছি।’
ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথম দফা চিরুনি অভিযানের মতো দ্বিতীয় দফার অভিযানকালেও পরিছন্নতা কর্মীরা প্রতিটি বাড়ি ও স্থাপনায় গিয়ে এডিস মশার লার্ভা বা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ রয়েছে কি-না পরীক্ষা করে দেখবেন।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট থেকে মশা মারতে চিরুনি অভিযান শুরু করেছিল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। সেই অভিযানের ১২ দিনে ৩৬টি ওয়ার্ডের মোট এক লাখ ২১ হাজার ৫৬০টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে এক হাজার ৯৫৭টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পেয়েছিল ডিএনসিসি। এছাড়া ৬৭ হাজার ৩০৬টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার বংশবিস্তার উপযোগী স্থান বা জমে থাকা পানি পেয়েছিল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, সচিব রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মঞ্জুর হোসেন, স্থানীয় কাউন্সিলর জামাল মোস্তফা, মোবাশ্বর হোসেন, রজব উদ্দিনসহ অনেকে।