ঢাকার স্মৃতি: হারিয়ে যাওয়া পল্টন

, জাতীয়

মায়াবতী মৃন্ময়ী, অতিথি লেখক | 2023-09-01 22:18:10

ঢাকার অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে। মুঘল ঐতিহ্যের রোশনাই আর নেই। একদা 'প্রাচ্যের রোমান্টিক নগরী' নামে প্রসিদ্ধ ঢাকা এখন হতশ্রী ও ভিড়াক্রান্ত।

ঢাকার হারানো ঐতিহ্যের মধ্যে পল্টন অন্যতম। সাইনবোর্ড ছাড়া আসল পল্টন কোথাও নেই। স্মৃতি হয়ে গেছে পল্টনের ময়দান।

ঢাকার এই বিশাল ময়দানটি চোখের সামনেই ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গেছে। পল্টন ময়দানের উত্তর পাশে ছিল একটি লেক। পঞ্চাশের দশকে পল্টন ময়দানে যাওয়ার জন্য নওয়াবপুরের শেষ মাথা থেকে সাপের মত আঁকাবাঁকা একটি সড়ক তৈরি করা হয়।

ষাটের দশকে সড়কটি পূনর্নিমাণ করে সোজা করা হয়। পঞ্চাশের দশক থেকেই ওখানে একটি অস্থায়ী স্টেডিয়াম ছিল। কাঠের গ্যালারির ব্লকগুলো যোগ করে অথবা সরিয়ে খেলার মাঠটি ছোট বড় করা হতো।

পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে বর্তমান স্টেডিয়ামটি তৈরির কাজ শুরু হয়। স্টেডিয়ামের সাথে একটি সুইমিং পুলও তৈরী করা হয়। দেশের সর্বপ্রথম সুইমিং পুল এবং স্টেডিয়াম, হকি স্টেডিয়াম, ভাসানী স্টেডিয়াম  ঘিরে মার্কেটের জঙ্গল তৈরি হওয়ায় খোলামেলা পল্টন ময়দান বিলুপ্ত হয়।

অথচ অতীতের দদিনগুলোতে প্রতি শীতে ইরানী জিপসিরা ঢাকা আসতো এবং পল্টন ময়দানে শত শত তাঁবু খাটিয়ে থাকতো। প্রতিদিন ভোরবেলা ইরানী রমনীরা ঘরে ঘরে গিয়ে উপহার সামগ্রী বিক্রি করতো।

এমন কি সৌদী আরব থেকেও পুরুষরা এসে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে তসবীহ, জায়নামাজ এবং ধর্মীয় তাবিজ, কবচ বিক্রয় করতো। রক্তচোষা সুদখোর কাবুলীওয়ালাও ছিল তখন।

গত শতাব্দীর ঢাকা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্নরকম। নওয়াবদের দিলকুশা মসজিদসহ (এই মসজিদটি ছিল পল্টন ময়দান মসজিদের পিছনে) এখনও শত বর্ষের পুরোনো মসজিদ আছে।

পল্টনের অতীত ঢাকার গৌরবের অংশ।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর