পল্লি বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতাবর্ধন প্রস্তাবসহ পাঁচটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৪৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে অর্থমন্ত্রীর আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ২০ তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী বলেন, 'ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জন্য ১০ হাজার ১১০ কিলোমিটার পল্লি বিদ্যুতের ডিস্ট্রিবিউশন লাইন তৈরি করা হবে। এ প্রকল্পে খরচের পরিমাণ ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ৭০ হাজার ৮০ টাকা। ডিস্ট্রিবিশন লাইনের জন্য আমরা সবসময় বিদ্যুৎ পাই না। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কিছু এলাকায় আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।'
তিনি বলেন, 'তৃতীয় প্রকল্পটি হলো পল্লি বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতাবর্ধনের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল। শহরভিত্তিক এলাকাগুলোতে উপরের লাইন থেকে নিচের লাইন নিয়ে জাতীয় গ্রিড পর্যন্ত যেতে পারে না। সেই সমস্যা দূর করার জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল দিয়ে গ্রিডে সংযোজন করা হবে। এ জন্য ১১২ কোটি ৭৮ লাখ ১৬ হাজার ৫২১ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। এতে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক এবং আমাদের জিওপি। এটি আমরা অনুমোদন দিয়েছি। এই প্রকল্পে ক্যাবল সাপ্লাই করবে দেশীয় কোম্পানি বিআরবি ক্যাবল।'
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো- কনসালটেন্সি সার্ভিসেস ফর ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকুরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট (ইপিসিএম) ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিবাস নির্মাণ শীর্ষক দুইটি প্রকল্প।
কনসালটেন্সি সার্ভিসেস ফর ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকুরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট (ইপিসিএম) মূলত গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) কাজের গুণগত মান অক্ষুণ্ণ রাখতে পরামর্শক প্রয়োজন। সে জন্য ১২৮ কোটি ৬৬ লাখ ৯২ হাজার ৩৭৫ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা (বনানী), জয়দেবপুর মহাসড়কের এয়ারপোর্ট মোড় এবং জসিমউদ্দিন মোড়ে ছয় লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।
এছাড়াও ঢাকার সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য দুইটি আলাদা প্রকল্পে দয়াগঞ্জ ও ধলপুরে ৯৮০টি ফ্লাট নির্মাণ করবে সরকার। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
প্রকল্পের আওতায় দয়াগঞ্জে ক্লিনার্স কলোনি নির্মাণ কাজের (প্যাকেজ নং এলজিইডি/ সিসিসি/ দয়াগঞ্জ/ পিকিইউ/ ১) সংশোধিত চুক্তি মূল্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় দয়াগঞ্জে মোট পাঁচটি ১০ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৭৮ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। উক্ত প্যাকেজে অনুমোদিত ৪৪০টি ফ্ল্যাটের পরিবর্তে দয়াগঞ্জে ৫০০টি ফ্ল্যাট অর্থাৎ অতিরিক্ত ৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ এবং সংশোধিত ড্রয়িং ও ডিজাইন অনুসারে ভবন নির্মাণে সামগ্রিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২২ কোটি ৩৫ লাখ ৭২ হাজার ২০৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০১ কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা। এ কাজটি পেয়েছে নাভানা কনস্ট্রাশন লিমিটেড।
দ্বিতীয় প্রকল্পে ধলপুরে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের আধুনিক জীবন যাপন ও নিরাপদ বসবাসের সুযোগ সৃষ্টির জন্য পূর্ত কাজ স্যানেটারি ও পানি সরবরাহ কাজ, বৈদ্যুতিক কাজ, জেনারেটর এবং লিফটসহ অন্যান্য আইটেমের পরিমাণ বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বিল অব কোয়ানটিটি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ভেরিয়েশন প্রস্তাবে ১৪ কোটি এক লাখ ৫৪ হাজার ৭৫৯ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৯৮ কোটি ৫১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮৭ টাকা। এ কাজটি পেয়েছে এমইসি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ধলপুরে ৪৮০ টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে।