এ বছর বন্যায় ২৮টি জেলায় স্থান ভেদে ৪০ লাখ মানুষ ১০ থেকে ১৫ দিন পানিবন্দি ছিল। তবে এর বিপরীতে যে সরকারি সহায়তা মিলেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। ত্রাণ বিতরণেও হয়েছে নানামুখী অনিয়ম। প্রয়োজনীয় লোকবল, বাজেট ও পরিকল্পনার ঘাটতির কারণে বানভাসী মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পায়নি।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বন্যাপরবর্তী এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান গবেষণাটি উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, ‘বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষ জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কাছে প্রত্যাশা বেশি থাকে। কিন্তু সে প্রত্যাশা পূরণে সরকার ও জনপ্রতিনিধি ব্যর্থ হয়েছে বলেই আমরা মনে করি।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রাজনৈতিক বিবেচনায় ত্রাণ বরাদ্দ, স্বজনপ্রীতি, ত্রাণের চাল কম দেওয়া, একই পরিবারকে একাধিকবার ত্রাণ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করলে ত্রাণ থেকে বঞ্চিত করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব কারণে আশ্রয় কেন্দ্রসহ বন্যা আক্রান্ত অন্যান্য স্থানে প্রয়োজনীয় সেবা- চিকিৎসা, পানি, স্যানিটেশন, নারী-শিশু বয়স্ক প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা, গবাদিপশু ও গৃহস্থালী সম্পদ সুরক্ষায় ঘাটতি ছিল। এছাড়া ত্রাণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায্যতা ও জনগণের অংশগ্রহণের ঘাটতির পাশাপাশি বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের সার্বিক তদারকিতে দুর্বলতা ছিল।’
টিআইবি’র জরিপে বলা হয়েছে, বন্যার ঝুঁকি যথাযথভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে মহড়ার আয়োজন, সতর্কতা ও নিরাপত্তামূলক বার্তা প্রচারে ঘাটতি ছিল। এছাড়া স্থানীয় জনগণের সম্পদ রক্ষায় ইউনিয়ন পর্যায়ে পদক্ষেপ, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতেও ঘাটতি ছিল। ত্রাণের চাহিদা ও ত্রাণ বিতরণ প্রস্তুতি, ত্রাণের তথ্য প্রকাশেও ঘাটতি দেখা গেছে।
কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া ও সিলেট জেলার ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ২০টি ইউনিয়নের ৬৮৩টি খানায় ৩১ জুলাই থেকে ৭ অগাস্ট পর্যন্ত এ জরিপ করা হয়।