২০০ নেপালি চালাত ক্যাসিনো পাড়া, একরাতে পালিয়েছে অর্ধেক!

ঢাকা, জাতীয়

শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-29 16:09:36

রাজধানীর অবৈধ জুয়ার আখড়া গড়ে উঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ততা ছিল নেপালি নাগরিকদের। তাদের দ্বারায় পরিচালিত হত ক্যাসিনো পাড়া। এই জন্য নেপালি এই নাগরিকরা পদ মর্যাদার ভিত্তিতে নিতেন মোটা অংকের টাকা। পেতেন থাকা-খাওয়াসহ নানা সুযোগ সুবিধা।

সূত্র বলছে, রাজধানীতে যে কয়টি ক্যাসিনো ছিল। সবগুলো মিলে কমবেশি ২০০ জনের মতো নেপালি কাজ করতেন। এইজন্য তারা ৭০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন নিতেন। ১৮ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান যখন শুরু করে। তখনই দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তার একদিন পর অর্থাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর হয়ে প্রায় ১৩০ জন নেপালি নাগরিক বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান।

এই সূত্রে আরো জানা যায়, নেপালিরা বাংলাবান্ধা এবং ভারতের ফুলবাড়ী, এই দুই স্থলবন্দর ব্যবহার করে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। একদিনেই ভারতের ভেতর দিয়ে ৬১ কিলোমিটার দূরে নেপালের কারকরভিটা স্থলবন্দর পৌঁছান  তারা। তারপর সহজেই নেপালে প্রবেশ করেন।

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথমে রাজধানীর তিনটি ক্যাসিনোতে একযোগে অভিযান শুরু করে। ওই রাতেই সেগুনবাগিচার একটি ফ্ল্যাটে নেপালিদের ধরতে অভিযান চালায়। কিন্তু এর আগেই সেখান থেকে সরে পড়েন সংশ্লিষ্ট নেপালি জুয়াড়িরা।

সেদিন নেপালিদের কয়েকজনকে সেগুনবাগিচার ওই বাসা থেকে পালাতে সহযোগিতা করেন পুলিশের দুই সদস্য। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর, ওই দুই পুলিশ সদস্য এএসআই গোলাম হোসেন মিঠু ও কনস্টেবল দীপঙ্কর চাকমাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ডিএমপি।

র‍্যাব সূত্র বলছে, ওই রাতে অভিযান চালিয়ে নেপালিদের না পেলেও, তারা বাসাটি থেকে ৭টি পাসপোর্ট জব্দ করেছে। পাসপোর্টে তাদের নাম, প্রসয়ন প্রবীন, সিধাই, ড্যাঙ্গল, ন্যাকর্মি, গৌতম, রণজিৎ ও নয়াজি।

অন্যদিকে অবৈধ ক্যাসিনো নিয়ে যখন দেশ জুড়ে তোলপাড়। তখন একসঙ্গে এতজন নেপালি নাগরিক কীভাবে দেশ ছাড়লেন? প্রশ্ন তুলছেন খোদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। 

এমন একটি প্রশ্নে অবশ্য কোন জবাব পাওয়া যায়নি, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ওসি ইজার উদ্দিনের।

তবে র‍্যাব সদর দফতরের সিনিয়র এএসপি মিজানুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ক্যাসিনোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসকল নেপালি নাগরিক দেশে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। তথ্য প্রমাণে নিশ্চিত হলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর