রাতে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে বসে মাদকের হাট

ঢাকা, জাতীয়

আকরাম হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-09-01 10:49:42

ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে দিনে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকলেও রাতে সেখানে মাদকের আসর বসে বলে অভিযোগ আছে। নিয়ম অনুযায়ী সন্ধ্যার পর সেখানে কোনও দর্শনার্থী থাকার কথা নয়। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই পাল্টাতে থাকে সেখানের চিত্র। বেড়ে যায় মাদককারবারী ও মাদকসেবীদের আনা গোনা। প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় গাঁজা, ইয়াবা ও হিরোইন।

জানা গেছে, প্রতিদিন রাত ৯টার পর থেকে ওই বধ্যভূমিতে বসে মাদকের আসর। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। সেখানে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরাও তাদের কাছে অসহায়। আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে ভেতরে প্রবেশ করে মাদকসেবীরা। এমনকি আনসার সদস্যদের রুমেও জোর করে মাদকের আসর বসানো হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্থানীয় জানান, এখানে দিনে মানুষ ঘুরতে আসে। তখন পরিবেশটা মোটামুটি ভালো থাকে। কিন্তু সন্ধ্যার পর বধ্যভূমি মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়।

আনসার সদস্যদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও জানান, সন্ধ্যার পর বাঁশি বাজিয়ে সবাইকে বের করে দেন আনসার সদস্যরা। এরপর এখানে কী হয় সেটার কোনও খবর রাখেন না তারা। কারণ তারা রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এই সুযোগে এলাকার নেতা, মাস্তান, টোকাইরা এসে মাদক বিক্রি করে ও সেবন করে।

এক আনসার সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাত ৯টার পর মাদকসেবীরা কবরস্থানে প্রবেশ করবেই। ওদের গ্রুপ অনেক বড়। অন্যদিকে আনসার সদস্য থাকেন মাত্র কয়েকজন। তাই মাদকসেবীদের কাছে তাদের জীবনের কোনও মূল্য নেই। তারা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু ঝামেলায় জড়াতে চান না।

তিনি আরও জানান, মাদককারবারীর সাথে জড়িত থাকার অপরাধে কয়েকদিন আগে রিয়াজ নামের একজনকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরবর্তীতে রিয়াজ ছাড়া পেয়ে আবারও মাদক ব্যবসা শুরু করেন।

সেখানে কর্মরত অন্য একজন আনসার সদস্য জানান, কিছুদিন আগেও রাতে পুলিশ টহল দিত। তখন এলাকা মোটামুটি শান্ত ছিল। এখন আর পুলিশ আসে না। ফলে মাদকসেবীরা আগের মতো আসা-যাওয়া শুরু করেছে।

রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে মাদক বেচাকেনার অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণেশ গোপাল বিশ্বাস বার্তাটোয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘বধ্যভূমিতে মাদকের আখড়া বসার কোনও খবর আমার জানা নেই। সেখানে প্রতিদিন দুইবার করে পুলিশ টহল দেয়। তাছাড়া স্থানটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্মারক হওয়ায় সেখানে আমরা অতিরিক্ত নজরদারি করি। তারপরও যখন অভিযোগ উঠেছে তখন বিষয়টি দেখার জন্য অতিরিক্ত টিম পাঠানো হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর