মাঠে নিয়মিত ট্রাফিক ডিসিরা, তবে সময় দিচ্ছেন কম

ঢাকা, জাতীয়

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-22 16:31:21

রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিলেও তেমন সফলতা পাননি সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তার ব্যর্থতা ঘোচাতে আগেভাগে নতুন এক সিদ্ধান্ত নেন ডিএমপির নতুন কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। জনদুর্ভোগ কমাতে ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে ডিএমপির চারট্রাফিক বিভাগের ডিসিদের, প্রতিদিন সকাল-বিকেল তিন ঘণ্টা করে রাস্তায় থাকার নির্দেশ দেন তিনি। ডিসিদের পাশাপাশি এডিসি ও এসিদেরও ওই সময় রাস্তায় থাকার নির্দেশ দেন তিনি।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ডিএমপি কমিশনারের এমন নির্দেশে নড়ে চড়ে বসে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগগুলো। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিসি, এডিসি ও এসিরা সকালে এবং বিকেলে অফিস যাত্রী মানুষের দুর্ভোগ কমাতে রাস্তায় কাজ করবেন। ডিসিদের এ কার্যক্রম মনিটরিং করবে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

এদিকে, ডিএমপির চার ট্রাফিক বিভাগে সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, এমন নির্দেশনার পর রাস্তায় নিয়মিত হয়েছেন ডিসিরা। তবে নির্ধারিত তিন ঘণ্টার কম সময় দিচ্ছেন তারা।

মাঠে নিয়মিত ট্রাফিক ডিসিরা, তবে সময় দিচ্ছেন কম

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডিসিরা নিজেদের মতো করে যেকোনো একটি স্পটে যাচ্ছেন; সেখানে ৫-১০ মিনিট থেকে চলে আসছেন। ডিএমপি কমিশনারের নতুন ট্রাফিক নির্দেশ পুরোপুরি পালন করছেন না ডিসিরা। তাদের দেখানো পথেই চলছেন এডিসি ও এসিরা।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির চার ট্রাফিক বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিগন্যালে কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তারা বলছেন, ডিসিরা প্রতিদিন সময় করে গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যালের পুলিশ বক্সে বসছেন। ৫-১০ মিনিট সময় পর তারা আবার চলে যাচ্ছেন। এই ৫-১০ মিনিটে তারা ট্রাফিক সার্জেন্ট ও পুলিশ সদস্যদের কাজ মনিটরিং করেন। এছাড়া ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কিছু নির্দেশনাও দেন।

এ বিষয়ে ডিএমপি ট্রাফিকের পশ্চিম বিভাগে কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট এনামুল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'আমাদের ডিসি স্যার আগে থেকেই সকাল বেলায় বিভিন্ন সিগন্যালে ঘোরেন। নতুন নির্দেশনায় সেটা আরও বেগবান হয়েছে।'

রাজধানীর খামারবাড়ি মোড়ে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশ রুহুল আমিন, মাসুদ ও নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিজয় সরণি মোড়ে একজন করে এডিসি সবসময় থাকেন। কেননা বিজয় সরণি মোড় দিয়ে ভিআইপি চলাচল বেশি থাকে। এছাড়া ডিসি মাঝেমধ্যে স্পটে আসেন। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে সার্জেন্টরা ও তারা কাজ করেন। তবে নতুন কমিশনার নির্দেশনার পর ডিসি সহ বাকি অফিসাররা রাস্তায় আগের থেকে তুলনামূলক বেশি আসছেন।

মাঠে নিয়মিত ট্রাফিক ডিসিরা, তবে সময় দিচ্ছেন কম

ডিসিদের রাস্তায় তিন ঘণ্টা ডিউটি পালন সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমপির ট্রাফিকের পশ্চিম বিভাগের ডিসি মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, 'আমি আমার কাজ নিয়মিত করছি। কাজ নতুন করে নয়, আগে থেকেই করছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।'

ট্রাফিক উত্তর বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ হাবিব বলেন, 'আমাদের ডিসি স্যার প্রতিদিন সকালে আসনে। সব কিছু তদারকি করে ১০ মিনিটের মধ্যে চলে যান। উত্তর বিভাগের সবগুলো সিগন্যালে ওনাকে প্রতিদিন যেতে হয়। তবে এডিসিরা আগের থেকে অনেক নিয়মিত হয়েছেন। সময়ও দিচ্ছেন আগের চেয়ে বেশি।'

ট্রাফিক উত্তর বিভাগের ডিসি প্রবীর কুমার রায় বলেন, 'আগে থাকতাম, এখনো রাস্তায় থাকি। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে ভালো কাজ করার চেষ্টা করছি। নতুন ডিএমপি কমিশনার স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি।'

অন্যদিকে ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা নিয়মিত পালন করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'ডিসিরা নিয়মিত তাদের কাজ করছেন। প্রতিনিয়ত তারা রাস্তায় যাচ্ছেন কাজ করছেন।'

তবে নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রাফিকের ডিসিরা রাস্তায় ঠিক তিন ঘণ্টা সময় দিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর