ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর দেশের বাজারে কারসাজি করে কেউ যেন দাম বাড়াতে না পারে এজন্য চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম এবং মো. আশরাফুল আলম।
জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার রাজিবুল হাসান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, বিকাল পর্যন্ত খাতুনগঞ্জে এ অভিযান চলবে।
এই অভিযান প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ আছে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আমদানিকারকরা বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন পাইকারি বিক্রেতারা।’
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলেও বর্তমানে যে পেঁয়াজ বাজারে রয়েছে তা আগের মূল্যে কেনা। কাজেই দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই উল্লেখ করে ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটি যাতে যৌক্তিক মূল্যে ভোক্তাদের হাতে পৌঁছে সেজন্যই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এদিকে মিসর ও চীন থেকে আমদানি করা ১৩ কন্টেইনার পেঁয়াজ এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে। এসব কন্টেইনারে প্রায় ৪শ’ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আজ (১ অক্টোবর) সকালে আমদানি করা এসব পেঁয়াজের একটি অংশ খাতুনগঞ্জে ঢুকেছে বলে জানা গেছে। মিয়ানমার থেকেও এরই মধ্যে আটটি ট্রলারযোগে ৬৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ টেকনাফ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে আমদানি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে পেঁয়াজের আকাশচুম্বী দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আসবে বলে সংশ্লিষ্টদের আশা।
গত রোববার ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর বিকেল থেকে দেশের প্রধান পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকাররা পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দেন। কিছু কিছু পাইকার বিক্রি করলেও তা ছিল অত্যাধিক বেশি দামে। রোববার বিকেল নাগাদ পাইকারিতেই ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। আর খুচরা দোকানে তা বিক্রি হচ্ছিল ১০০ টাকা কেজি দরে। অথচ রোববার বেলা ৩ টার আগ পর্যন্ত খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
গতকাল সোমবার সকাল না হতেই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম হাকা হচ্ছিল ১০০ টাকা। যদিও ৯০ হতে ১০০ টাকা কেজি দরে খুচরা দোকানিরা পেঁয়াজ ক্রয় করেন। তাছাড়া অধিকাংশ খুচরা দোকানি আগের মজুদ বিক্রি হওয়ার পর গতকাল নতুন করে পেঁয়াজ বিক্রির জন্য রাখেননি। ফলে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার গতকাল অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে।