‘দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম বললে চাকরি থাকবে না’

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-31 01:51:08

দেশের সর্বত্র দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। বড় বড় দুর্নীতি করে এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম বললে চাকরি থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রত্যেক মানুষের মধ্যে দুর্নীতি আছে। সবারই কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে।’

সোমবার (০৭ অক্টোবর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক মুক্ত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক সমন্বয় সুরাইয়া রহমান অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘সাধারণ মানুষের অভিযোগ সরকারি অফিস-আদালত, পুলিশ প্রশাসনেই দুর্নীতি হয়। আমি বলি, আরো দুই চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারা বড় বড় দুর্নীতি করে। কিন্তু তাদের নাম বলা যাবে না। বললে চাকরি থাকবে না। দুর্নীতির কথা উঠলেই স্বাধারণ মানুষ প্রথমেই আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন, সরকারি অফিস। কারণ ওই যে সরকারি অফিসে যাওয়া লাগে। বিদ্যুৎ অফিসে গেলে পায়সা ছাড়া কিছু করাই যায় না। ট্যাক্স দিতে কাস্টমসে টাকা দিতে হয়, পুলিশে তো কথাই নাই। আর দুই তিনটা জায়গার কথা উচ্চারণ করতে মানা। সমস্যা হয়ে যাবে। পরবর্তী দিন কি হয়ে যাবে, এর কোনো উপায় নেই। এসব জায়গার কথা বলা যাবে না।’

‘আমরা কিন্তু এর চেয়ে আরও বেশি দেখি, প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে দুর্নীতি রয়েছে। আমি যদি কাস্টমসে আমাদের অফিসারদের বলি, যেখানে যে ডিউটি আছে ঠিকমত করবা। মালামাল আমদানির ক্ষেত্রে ঠিকমত ডিক্লিয়ারেশন দেওয়া আছে কিনা দেখবা, মাল কতটুকু এনেছে সেটা দেখবা। দেখা গেলো যে আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে,’ যোগ করেন তিনি।

ইসলাম ধর্মে কারো হক নষ্ট করা নিষেধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা কখনো ধর্মের কথা শুনি না, একবারও চিন্তা করি না হিসাব দেব কি করে।’

দেশ উন্নত হচ্ছে উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০০৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সব দেশের জাতীয় আয় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। আগামী ১০ বছরে যদি প্রবৃদ্ধি আট থেকে বেড়ে ১০ শতাংশ হয়, তবে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত দেশ হবে বাংলাদেশ। দেশে এখন ১৮ কোটি মানুষ, তার মধ্যে অন্তত চার কোটি মানুষের উচিত কর দেওয়া। কিন্তু কর দিচ্ছেন মাত্র ২০ থেকে ২২ লাখ লোক। সবাইকে করের আওতায় আসা উচিত। সরকারকে ভরণ পোষণ করতে হবে।’

‘রফতানির জন্য যেসব কাপড় আনা হয়, সেসব কাপড়ে ডিউটি ফ্রি সুযোগ দেওয়া আছে। তারা ডিউটি ফ্রি কাপড় আমদানি করে গার্মেন্টসে পোশাক তৈরি করে রফতানি করে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আনবেন। কিন্তু তারা বৈদেশিক মুদ্রা সরকারকে দিয়ে দেবেন না। এ জন্য সরকার তাদের সমান টাকা দিয়ে দেবে। লাভটা তারাই ভোগ করবে। এ সুযোগ নিয়ে ডিউটি ফ্রি কাপড় এনে তারা পোশাক তৈরি করে রফতানি না করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দেন। সরকারকে প্রায় ৫০ শতাংশ ট্যাক্স না দিয়ে এনে এটা দেশেই বিক্রি করে দেন। এতে অনেক লাভ। কারণ তারা ট্যাক্স বাবদই ৫০ শতাংশ ছাড় পেয়েছে। এসবের জন্য ইসলামপুর, নয়াবাজার, তাঁতি বাজার এ রকম কত বাজার গড়ে উঠেছে শুধু মাত্র এ ধরনের বন্ডের কাপড় দিয়ে। শুধু ঢাকায় না, চট্টগ্রাম, খুলনা সব জায়গায়,’ যোগ করেন তিনি।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর