যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে বাড়ি আছে মিজানের

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-09-01 20:32:14

যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানের বাড়ি রয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের আওরঙ্গজেব রোডে অবস্থিত পাগলা মিজানের বাড়িতে অভিযান শেষে তিনি এ কথা জানান।

সারোয়ার আলম বলেন, ‘পাগলা মিজানের যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বাড়ি রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এছাড়া সিডনিসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশে তার বাড়ি রয়েছে বলেও জানতে পেরেছি। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, দেশ থেকে টাকা পাচার করে বিদেশে বাড়ি কিনেছে।’

আরও পড়ুন: মিজানের বাসায় অস্ত্রসহ ৬ কোটি টাকার চেক

তিনি বলেন, ‘তার বাসায় অভিযান চালিয়ে আমরা ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার চেক, ১ কোটি টাকার এফডিআর উদ্ধার করা হয়। সরকারি মাসিক বেতন ৩৫ হাজার টাকা ছাড়া তার দৃশ্যত কোনো ব্যবসা নাই। তবে ১৫ বছর আগে তার ইটভাটার ব্যবসা ছিল, কিন্তু এখন সেটিও নাই। কীভাবে তিনি এত টাকা আয় করেছে সে বিষয়টি আমরা তদন্ত করব।’

সাংবাদিকদের বিফ্রিং করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম

 

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ টাকা উত্তোলন করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকাগুলো কোথায় রেখেছেন এখনো আমরা জানতে পারিনি। তদন্ত হয়তো এই জিনিসটিও বের হয়ে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা কয়েকদিন ধরে মিজানকে আটক করার জন্য চেষ্টা করছিলাম। পরে আজকে সকালে শ্রীমঙ্গলের কলেজ গেট এলাকা থেকে ভোর ৫টায় তাকে তার বান্ধবীর বাসা থেকে আমরা আটক করি। এ সময় তার কাছ থাকা একটি পিস্তল চার রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন ও ২ লাখ টাকা উদ্ধার করি।’

আরও পড়ুন: মোহাম্মাদপুরের পাগলা মিজান আটক

সারোয়ার আলম বলেন, ‘তার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তাকে শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসি। সেই তথ্য অনুযায়ী তার কার্যালয়ে এবং বাসায় অভিযান পরিচালনা করি। তবে তার কার্যালয়ে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা হবে। সেই জন্য তাকে আমরা এখন শ্রীমঙ্গল নিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনেও মামলা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনে যদি তার বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে আরও মামলা হবে।’

মিজানের বাসায় থেকে উদ্ধারকৃত ব্যাংক চেক 

 

তিনি বলেন, ‘মিজানের বিরুদ্ধে জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসাসহ সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে চাঁদাবাজির ছাড়া ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ততারও অভিযোগ রয়েছে। উদ্ধারকৃত টাকা এসব উৎস থেকে আসতে পারে। তবে তদন্ত শেষে সব বলা যাবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় তাকে আমরা গ্রেফতার করেছি। শুধু কাউন্সিলর নয়, দেশের যেকোনো নাগরিক অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করলে তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। তারই অংশ হিসেবে কাউন্সিলর মিজানকে আমরা গ্রেফতার করেছি।’

তিনি বলেন, ‘১৯৮৯ সালে ৩২ নম্বরের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য যে হামলা করা হয়েছিল, সে ঘটনার সঙ্গে মিজান ও তার ভাই সংশ্লিষ্ট। তার ভাই এবং তিনি এক সময় ফ্রিডম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এগুলা তদন্তে গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।’

উল্লেখ্য, হাবিবুর রহমান মিজান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

এ সম্পর্কিত আরও খবর