প্রবাসে ঈদ: কিন্তু মন পড়ে থাকে বাংলাদেশে

, জাতীয়

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-27 16:33:08

মক্কা (সৌদি আরব ) থেকে: সৌদি আরবের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ উঠেছে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আজ শুক্রবার উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। কিন্তু কতটা আনন্দে ঈদ উদযাপন করেন প্রবাসীরা?

সেই প্রশ্নের উত্তরটা অবশ্য মেলে না বাংলাদেশের সঙ্গে। সৌদিতে ফজরের নামাজের পর সূর্যোদযয়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ঈদের জামাত। সেই জামাতে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় প্রবাসীদের ঈদ। তবে আনন্দ আর উত্তেজনার তেমন কোনো লেশ নেই এখানে।

সবাই এখানে এসেছেন পেট্রো ডলারের আশায়। তাই ঈদের দিন হলেও বাড়তি আয়ের স্বপ্নে এখানে অনেকেরই দোকান খোলা। স্বজনরা থাকে দেশে। সেখানে পরদিন ঈদ। তাই উচ্ছ্বসটা ঠিক মেলে না এক সুরে।

তবে অনেকে ঈদ উপলক্ষে এদিন পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছেন নিজেদের ঈদ পালনের কথা। একইসঙ্গে জেনে নিচ্ছেন- প্রিয় স্বজনদের ঈদ প্রস্তুতির কথাও।

এখানে শ্রমজীবি প্রবাসী বিশেষ করে যারা কোম্পানীতে কাজ করেন তারা কেউ চারদিন কেউ বা ছুটি পেয়েছেন দুই থেকে তিনদিন। এ সময়টাকে কাজে লাগাতে অনেকেই ছুটে আসছেন মক্কায়- পবিত্র ওমরা পালনের জন্য।

মসজিদ আল হারামের কাছে গ্র্যান্ড মক্কা হোটেলের পেছনে জবলে সউদান এলাকায় কথা হয় বেশ কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে। তাদের সবার অভিন্ন কথা, ঈদে দেহটা থাকে এখানে, মন পড়ে থাকে দেশে। স্মৃতিতে ভেসে বেড়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে ফেলে আসা ঈদের উৎসবের কথা।

এমনই একজন মোশতাক আহমেদ। পেশায় মুদি ব্যবসায়ী। তিনি জানান, ঈদের ছুটিতে অনেকেই বন্ধুদের নিয়ে মক্কার দিকে চলে আসেন। তখন বেচাকেনাটাও বেশ জমে। আনন্দ করার চেয়ে আমাদের নজর থাকে দিনরাত দোকান খোলা রাখা আর ব্যবসার দিকে। নামাজের সময়টা দোকান বন্ধ রেখে কাতারে দাঁড়িয়ে যাই, তারপর ফের চলে বাণিজ্য। জীবনটাই এখানে এ রকম।

ঈদের বিশেষ কোনো খাবার? সেদিকে অত নজর থাকে না। তবে ঘরোয়াভাবে কিছু আয়োজন তো থাকেই- যোগ করেন মোশতাক আহমেদ।

ঈদ উপলক্ষে এদিন প্রবাসীদের অনেককেই ভিড় করতে দেখা গেলো দেশি স্বাদের খাবারের খোঁজে। মক্কায় প্রবাসীদের অনেকেই হোটেল রেস্তোরাঁর ব্যবসায়ী।

তাদের একজন চট্রগ্রামের মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন চৌধুরী। ভোর থেকেই তার নেতৃত্বে হোটেল কর্মিরা নেমে পড়েছেন প্রবাসীদের রসনা বিলাস মেটাতে।

মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানান, সকালে তিনি বেশ কয়েকটি খাসি জবাই করেছেন। প্রায় দুই হাজার প্রবাসীর খাবারের আয়োজন চলছে অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশে। চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানি খাবারের স্বাদ তুলে দেবার পাশাপাশি বিরিয়ানি, দেশি মাছ, শেমাই, মিষ্টি আর জিলাপীর সমাহার থাকবে তার রেষ্টুরেন্টে।

মক্কার হোটেলগুলোতে কাজ করা প্রবাসীদের অনেকেই ছুটি পাননি। মূলতঃ তাদের ঘুরে বেড়ানোর ফাঁকে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনই তার লক্ষ্য- জানান মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন চৌধুরী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর