ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলেও, বাংলাদেশের সংকটকালীন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে মিয়ানমার, তুরস্ক, মিশরসহ কয়েকটি দেশ। ফলে বাজারের অস্থিতিশীলতাও কমেছে অনেকাংশে। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় মিয়ানমার থেকে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আনছে আমদানিকারকরা।
তবে গত ১০দিনে দেশের অন্যতম বৃহৎ ভোগ্য পণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে মিয়ানমারের প্রত্যেকটি চালান যেন হয়ে উঠেছে পঁচা পেঁয়াজের স্বর্গরাজ্য। যেখানে আমদানিকারক ও আড়তদারদের দুশ্চিন্তা ঘুঁচবে। সেখানে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে হিতে বিপরীত। পঁচা পেঁয়াজগুলো কি করবেন তাই ভাবিয়ে তুলছে তাদের। উপায় না পেয়ে শ্রেণিভেদে ১০-৪০ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকতে দেখা গেছে তাদের।
এমন দাম চাওয়া হলেও, এখানে ক্রেতাদের ইচ্ছাটাই প্রাধান্য পাচ্ছে। তাদের মনে যেমন দাম দেওয়ার ইচ্ছে জাগছে, তাই বলছেন। উপায় না পেয়ে তাতেই ছেড়ে দিচ্ছেন আড়তদাররা।
আড়তদাররা জানান, গত ১০দিন থেকে প্রত্যেকদিন ১০-১২ গাড়ি (১৩-১৪ টনের) মিয়ানমারের পেঁয়াজ বাজারে ঢুকছে। তবে গাড়িতে অর্ধেকেরও বেশি পেঁয়াজ মিলছে পঁচা অবস্থায়।
মূলত অতিরিক্ত লাভের আশায় মিয়ানমার থেকে ছাড়া নৌকাগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি পেঁয়াজ লোড করা হচ্ছে। যার কারণে নৌকায় পানি ঢুকে নিচের পেঁয়াজগুলো নষ্ট হয়ে পড়ছে।
তারা জানান, যেখানে আগে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ আসতে ৮-১০ দিন সময় নিতো, সেখানে বর্তমানে ১৫-২০ দিন সময় নিচ্ছে। আবার বাজারে আসতেও আরও ১-২দিন পর্যন্ত সময় নিয়ে নিচ্ছে। সে কারণেও পঁচা পেঁয়াজের সংখ্যা বাড়ছে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লা মার্কেটের কাঁচা পণ্যের আড়তদার জাবেদ ইকবাল বলেন, প্রতিদিনের ধারাবাহিকতায় ১৫ গাড়ি (১৩-১৪ টনের) মিয়ানমারের পেঁয়াজ বাজারে ঢুকেছে। কিন্তু প্রত্যেক গাড়ির অর্ধেকই পেয়েছি পঁচা অবস্থায়।
তিনি আরও বলেন, একটি গাড়িতে ৩৫০ বস্তার মধ্যে মাত্র ১০০ বস্তা ভালো পেঁয়াজ পেয়েছি। বাকিগুলো সব পঁচে গেছে। তাই সেগুলো রাস্তায় রেখে নাম মাত্র মূল্যে ছেড়ে দিচ্ছি। আজ ভারতীয় পেঁয়াজের কোনো গাড়ি বাজারে ঢুকেনি বলেও জানান এ ব্যবসায়ী।
এদিকে খাতুনগঞ্জে রোববার (১৩ অক্টোবর) মিয়ানমারের ভালো মানের পেঁয়াজ পাইকারিতে শ্রেণিভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। তবে ভারতের পেঁয়াজ ৮০ টাকা মূল্য নির্ধারিত থাকলেও, বাজারে কোনো মাল নেই বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।
পঁচা পেঁয়াজের বিষয়টি নিশ্চিত করে হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা নৌকাগুলো আসতে সময় নেওয়ায় বেশির ভাগ মাল পঁচে যাচ্ছে। প্রতিদিনই ৫০ শতাংশ পেঁয়াজ পঁচা অবস্থায় পাচ্ছি আমরা।
তিনি বলেন, তবে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ একদমই নেই। গত সপ্তাহজুড়ে মাত্র ১০-১২ গাড়ি (১৩-১৪ টনের) বাজারে এসেছিল।