উদ্বোধনের ১৮মাস পরেও চালু হয়নি খুমেকের আইসিইউ ভবন

খুলনা, জাতীয়

মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, খুলনা | 2023-08-24 14:47:04

উদ্বোধনের পর দীর্ঘ ১৮ মাস পেরিয়ে গেলেও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) নতুন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ভবনটি চালু করা সম্ভব হয়নি।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) সরেজমিনে খুমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও জনবল সংকটের কারণে খুলনাঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইসিইউ ভবনটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে আইসিইউ ভবনের দ্বিতীয় তলায় অস্থায়ীভাবে ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। এছাড়া এখন খুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তৃতীয় তলায় মাত্র চারটি বেড দিয়ে আইসিইউ বিভাগের কাজ চলছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপর্যাপ্ত।

হাসপাতাল সূত্র‌ে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ভবনের কাজ শেষ হবার আগেই ২০১৮ সালের ৩ মার্চ এটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এরপর দীর্ঘ দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবলের অভাবে চালু হচ্ছে না অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভবনটি। এ ব্যাপারে একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েও কোন সুফল মেলেনি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খুমেক হাসপাতালে প্রতিদিন ১২শ'র বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। বিশাল সংখ্যা এ রোগীদের জন্য বর্তমানে মাত্র চারটি বেড দিয়ে চলছে খুমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগ।

সূত্র জানায়, প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে খুমেক হাসপাতালের পূর্ব পাশে ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের মাঝখানে নির্মাণ করা হয় খুমেক হাসপাতালের আইসিইউ ভবন। দুইতলা এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় চারটি কেবিন, ১০টি আইসিইউ, ১৬টি পোস্ট অপারেটিভ বেড নিয়ে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া নীচতলায় রয়েছে অতি জরুরি সার্জারি রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ইমার্জেন্সি সার্জারি ইউনিট। গত বছরের ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা সফরকালে উদ্বোধন করা হয় খুমেকের নতুন আইসিইউ ভবন। কাজ সম্পন্ন করে এক মাসের বেশি সময় আগে গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে ভবন বুঝে নেয় খুমেক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে চালু হচ্ছে না নতুন এ ভবনটি। ১৪৪ জনের জনবল চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিটি পাঠানোর পর এক বছর পার হয়ে গেলে এখনো পূর্ণাঙ্গ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রীর চাহিদা পাঠিয়ে বার বার যোগাযোগ করা হলেও মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

খুলনা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও আইসিইউ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আইসিইউ ভবনটি ভালোভাবে চালু করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে জনবল ও যন্ত্রপাতি চেয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। তবে খুলনা মেডিকেল কলেজের জন্য নিয়মিত কিছু যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে। সেখানে কিছু যন্ত্রপাতি কেনার জন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পাওয়া গেলে বর্তমানে যে জনবল আছে, তা দিয়েই আইসিইউ বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে ।

খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ (সহযোগী অধ্যাপক) ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, খুলনাসহ আশপাশের জেলায় কেউ গুরুতর অসুস্থ্য হলে তাকে সবার আগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ হাসপাতালটিতে আইসিইউ সেবা থাকবে না তা কল্পনাও করা যায় না। অতি দ্রুত যন্ত্রপাতি ও জনবল সমন্বয়ের মাধ্যমে আইসিইউ বিভাগ চালু করার ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর