বিমানের বিতর্কিত ডিএফও জামিল বাদ, এলেন আরেক বিতর্কিত

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-28 18:13:47

অবশেষে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিতর্কিত ডিরেক্টর ফ্লাইট অপারেশন (ডিএফও) ক্যাপ্টেন ফারহাত জামিলকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আরেক বিতর্কিত পাইলট ক্যাপ্টেন এ বি এম ইসমাইলকে।

রোববার (২০ অক্টোবর) বিমানের পরিচালক (প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এতে বলা হয়, অবিলম্বে এ নিয়োগ কার্যকর হবে।

ক্যাপ্টেন ইসমাইলকে নিয়োগ দিতে তড়িঘড়ি করে গত সপ্তাহে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নতুন নিয়োগ পাওয়া ডিএফও বিগত বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে চিফ অব ফ্লাইট সেফটি পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দারের অনুসারী হওয়ায় তিনি ওই পদে আসীন হয়েছিলেন।

এদিকে পাইলট নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন ক্যাপ্টেন ফারহাত জামিল।

বিদায়ী বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোসাদ্দিক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনের অন্যতম কারণ ছিল পাইলট নিয়োগে দুর্নীতি। আর এ দুর্নীতির সঙ্গে ক্যাপ্টেন ফারহাত জামিলের নামও উঠে এসেছে।

বিমানের মোট ৫৮ জন পাইলট নিয়োগের কেলেঙ্কারি আলোচিত ঘটনা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে জানা গেছে, দু’টি নিয়োগেই অন্যতম মূল ভূমিকায় ছিলেন ক্যাপ্টেন ফারহাত জামিল। কারণ তৎকালীন বিমানের ফ্লাইট অপারেশন (ডিরেক্টর) হিসেবে তিনিই ছিলেন নিয়োগ কমিটির প্রধান। দুদকের অনুসন্ধান ছাড়াও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনেও পাইলট নিয়োগের অনিয়মে বর্তমান এমডি ক্যাপ্টেন জামিলসহ একাধিক ব্যক্তির যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে অনিয়মের অভিযোগ মাথায় নিয়ে মোসাদ্দিক আহমেদ বিদায় নিলেন, সেই একই অভিযোগ ক্যাপ্টেন জামিলের বিরুদ্ধেও। তাই আগের এমডিকে যদি এ অভিযোগে চাকরি হারাতে হয়, তাহলে বর্তমান এমডি কেন চাকরি হারাবেন না?

মোসাদ্দিক আহমেদ ও ফারহাত জামিলের খুশিমত পাইলট নিয়োগ দিতে নিয়োগ কমিটির একজনকে পাশ কাটানো হয়েছে। মোসাদ্দিক তার ভাজিতাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। পাইলট নিয়োগে ১৩ ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সংশোধনী এনে শিক্ষাগত যোগ্যতা হ্রাস করা, এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিমানের পরিচালনা পর্ষদকে উপেক্ষা করা, নিয়োগ পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা রাখা (মৌখিক পরীক্ষায় কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষার নজির নেই), বিমানের অপারেশনাল ম্যানুয়েল পার্ট-এ অনুসারে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৭৫ নম্বরের লিখিত এবং ২৫ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষার বিধান থাকলেও তা না মানা, ৩০ জন প্রার্থীর ডিগ্রি এইচএসসি (বিজ্ঞান) সমমান কি না, তা যাচাই বাছাই না করেই গ্রহণের সুপারিশ করা, ক্যাডেট পাইলটের জন্য সম্পূর্ণ লিখিত পরীক্ষায় পাস করা ৭৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ২২ জনকে মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করানো হয়।

এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের অপারেশনাল ম্যানুয়েল অনুসারে ক্যাডেট পাইলট পদের জন্য বয়স ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ বছর রাখা হয়। এখানেও মোসাদ্দিক বয়সসীমা ৪০ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে অনিয়ম করেছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর