ঝিনাইদহ: চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহে কমেছে পাটের চাষ। দাম কম এবং পাট পচানোর স্থান না পাওয়ায় চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এ জেলার চাষিরা। এছাড়াও এ বছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে বপনকৃত পাটের ক্ষতি হয়েছে। পানি জমে অনেক স্থানে পাট গাছ মরে গেছে।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে জেলার ৬ উপজেলায় এ বছর ১৫ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ২০ হেক্টর কম।
জানা যায়, এক সময় দেশের অন্যান্য এলাকার মতো এ অঞ্চলের চাষিরা পাট চাষ একেবারেই কমিয়ে দিয়েছিল। পরবর্তীতে দাম বৃদ্ধির পর চাষিরা ধীরে ধীরে পাট চাষে ঝুঁকতে থাকে। তবে গত দু-তিন বছর ধরে পাট চাষ করে চাষির উৎপাদন খরচ উঠছে না। ক্ষেত থেকে পাট কাটা, বহন করে এনে নদী, বিল, খাল ও পুকুরে জাগ দিতে অনেক টাকা ব্যয় হয়। যে কারণে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ কমিয়ে দিয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছে চাষিরা।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের চাষি নাজির উদ্দিন জানান, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে ১৬-১৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিঘাতে পাট হয় ১০/১২ মণ। প্রতি মণ পাট বিক্রি হয় এক হাজার টাকা থেকে ১৪শ টাকা পর্যন্ত। এ দামে পাট বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠে না। গত বছর তিনি ২৫ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। এবার কমিয়ে ১৬ কাঠায় চাষ করেছেন।
একই উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের চাষি বাচ্চু মোল্লা জানান, গত বছর তিনি সাড়ে ৯ বিঘায় পাট চাষ করেছিলেন। এবার কমিয়ে ৭ বিঘায় চাষ করেছেন। বৃষ্টির কারণে ৫ বিঘা জমির পাট নষ্ট হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার কাষ্টসাগরা গ্রামের চাষি এনামুল হক জানান, তিনি ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। শিলাবৃষ্টিতে পাটের ডগা ভেঙে গেছে। গাছের বাড়তি থেমে গেছে। কয়েক দিন অপেক্ষা করবেন। গাছ না বাড়লে ক্ষেত মেরে দিবেন। পরে ধান চাষ করবেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জি এম আব্দুর রউফ জানান, চাষিরা ধান চাষে ঝুঁকে পড়ায় পাট চাষ কমেছে। শিলাবৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে পাটের ক্ষতি হয়েছে। এরপরও চাষিদের নানা ভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।