অভিজ্ঞতা অর্জনেই হাতিরঝিলের পানি পরিষ্কারের বরাদ্দ শেষ!

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-21 21:04:28

রাজধানীর প্রাণ হাতিরঝিলের পানির তিক্ত দুর্গন্ধ দূর করতে অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শুরু না হলেও ইতোমধ্যে মেয়াদ শেষ হয়েছে। পুনরায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এমনকি কাগজে-কলমে দেখানো হয়েছে, প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের ৭৫ শতাংশ টাকা ইতোমধ্যে ব্যয় হয়ে গেছে। যার অধিকাংশ ব্যয় করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অস্ট্রেলিয়া ও চীন সফর করে অভিজ্ঞতা অর্জনে।

রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি নগরের সৌন্দর্য বাড়াতে হাতিরঝিল প্রকল্পটি নেওয়া হয়। ২০০৭ সালে শুরু হয় প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। ২০১৩ সালে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এরপর থেকে হাতিরঝিল জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি নগরবাসীর বিনোদনের অন্যতম একটি স্থানে পরিণত হয়।

২০১৩ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় হাতিরঝিল প্রকল্প/ছবি: সুমন শেখ

তবে উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে হাতিরঝিলের পানি দূষিত হওয়া শুরু করে। এক সময় বিবর্ণ কালচে পানি থেকে আসতে থাকে উৎকট গন্ধ। এর ফলে হাতিরঝিলের পানির তিক্ত দুর্গন্ধ দূর করতে অর্ধশত কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়।

জানা গেছে, হাতিরঝিলের পানি দুর্গন্ধমুক্ত করতে গৃহীত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত এবং ব্যয় ধরা হয় ৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সেই অনুযায়ী প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা একাধিকবার অস্ট্রেলিয়া সফর করেন। ফলে কর্মকর্তাদের বিদেশে অভিজ্ঞতা অর্জন আর যন্ত্রপাতি দেখতে অধিকাংশ অর্থ ব্যয় হয়ে গেছে।

তবে এক বছরে যে প্রকল্পের কাজই শুরু হয়নি সেই প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন হলে হাতিরঝিলের লেকের পানি পরিষ্কার ও দুর্গন্ধমুক্ত হবে।

রাজধানীবাসীর অন্যতম বিনোদনের স্থান হাতিরঝিল/ছবি: সুমন শেখ

এ বিষয়ে হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক ও রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পার্থে একটি লেকের পানি খুব দূষিত ছিল। এখন ওই লেকের পানি স্বচ্ছ ও দুর্গন্ধমুক্ত করা হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে হাতিরঝিলের পানিও পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞরাই এখানে কাজ করছেন, তবে আমরা মাঝে মাঝে সেটা পরিদর্শন করি। ইতোমধ্যে চীন থেকে বিভিন্ন প্রযুক্তি নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে কাজ মাত্র শুরু হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শেষ হলে হাতিরঝিলের পানি পরিষ্কার হবে। ফলে আর দুর্গন্ধ থাকবে না। আমরা চাইছি, পানি স্থায়ীভাবে পরিষ্কার থাকুক। কিন্তু মানুষকে আগে সচেতন হতে হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর