মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে ময়লার ভাগাড়

ঢাকা, জাতীয়

সাদিয়া কানিজ লিজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 10:39:00

মগবাজারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে দিয়ে হেঁটে গেলে রাস্তার ওপর ময়লার ভাগাড়টি সবার নজরে পড়বে। অল্প বৃষ্টিতেই ওই ময়লা ছড়িয়ে পড়ে মূল রাস্তায়। এতে গাড়ি চলাচলসহ পথচারীদের হাঁটাচলায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাস্তায় ময়লা ছড়িয়ে থাকায় সব সময় যানজট লেগে থাকে সড়কটিতে।

ময়লার দুর্গন্ধে অতিষ্ট পথচারীদের অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার ভ্যানগুলো প্রতিদিন এখানে ময়লা ফেলে। অথচ সামনেই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাইনবোর্ড ঝুলছে। তার সঙ্গেই আছে জাতীয় চার্চ পরিষদ আর পরিষদের ভেতরেই এ জি চার্চ নামে ইংরেজি ও বাংলা মিডিয়াম স্কুল। আশেপাশে রয়েছে আরও কিছু বড় প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এই সমস্যা দেখার ফুসরত নেই সিটি করপোরেশনের।

বাংলামোটর থেকে মগবাজারগামী এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য যান চলাচল করে। ফলে গাড়ি চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া একটু সামনে এগোলেই ইস্পাহানি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই আবর্জনার তিক্ত গন্ধ নিয়েই স্কুলে যাতায়াত করছে। পাশাপাশি অভিভাবকরাও সহ্য করেন এই দুর্গন্ধ। অথচ অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই রাস্তায় ব্যবহার করতে হয় তাদের।

এভাবেই রাস্তা পার হতে হয় পথচারীদের

মগবাজারের এই রাস্তার মাঝামাঝি অংশ দিয়ে ফ্লাইওভার উঠে যাওয়ায় দুই পাশের রাস্তা কিছুটা সংকুচিত হয়ে গেছে। সংকুচিত হয়ে যাওয়া রাস্তার ওপরই ফেলা হয় ময়লা। তাই অনেকটা উপায় না পেয়ে এভাবেই রাস্তা পার হতে হয় পথচারীদের।

জানা গেছে, সারাদিনের ময়লা রাতে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। ময়লা সরানোর সময় কিছু অংশ কন্টেইনারে করে নিয়ে যাওয়া হয়। বাকি অংশ রাস্তার ওপরই পড়ে থাকে। এগুলো রাতে কুকুর-বিড়াল রাস্তার ওপরে টেনে আনে। ফলে গাড়ির চাকার সঙ্গে ময়লা অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা সমন্বয়কারী খাজা আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে ময়লার ভাগাড় থাকাটা বিব্রতকর। আমরা লিখিত অভিযোগ করার পরও সমাধান হয়নি। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেখছি এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে।’

ভুক্তভোগী এক অভিভাবক জানান, এই রাস্তা দিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে আনা নেওয়া করতে অনেক অসুবিধা হয়। নাকে কাপড় না দিয়ে হাঁটা যায় না।

জায়গা স্বল্পতার কারণে রাস্তার পাশেই ময়লা রাখা হচ্ছে

ডিএসসিসি’র প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর জাহিদ হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘আমরা নিরুপায়, রাস্তায় ময়লা ফেলার কোনও ইচ্ছা আমাদের নেই। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আমাদের ময়লা ফেলার জন্য আলাদা জায়গা দেয়নি। ফলে জায়গা স্বল্পতার কারণে রাস্তার পাশেই ময়লা রাখতে হয়। তবে উপযুক্ত জায়গা দেওয়া হলে সেখানেই ময়লা রাখা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তার পাশে ময়লা ফেলায় আমাদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা কারও কথা রাখতে পারছি না। কারণ ওই স্থান থেকে ময়লা নিয়ে অন্যত্র রাখলে সেখানের বাসিন্দারাও অভিযোগ করবেন। তবে দিনে যানজট থাকায় রাতেই ময়লা নেওয়া হয়। এছাড়া হাইকোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় দিনে ময়লা অপসারণ করা সম্ভব না। তাই রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে ময়লা সরানো হয়।’

সামুয়েল হাদসা নামের এক ব্যক্তি জানান, এই ময়লার গন্ধে এলাকায় টিকে থাকা কষ্টকর। এখান থেকে ভাগাড়টি সরিয়ে নেওয়া হলে তারা বেশ উপকৃত হবেন।

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম নামে এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘এই সড়কটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এটা কি ময়লা ফেলার জায়গা? এখানে ময়লা রাখা উচিত? কিন্তু কে শোনে কার কথা।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর