১৮ বছরেও স্বপ্নরা ধরা দেয়নি!

, জাতীয়

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 17:20:32

সৌদি আরব(জেদ্দা)থেকে: মাছের আড়তে কাজ করেন শাহাবুদ্দিন মনু। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে জেদ্দায় পাইকারী ও খুচরো মাছের কারবারের সঙ্গে যুক্ত তিনি। সকাল থেকেই মনুর হাকঁডাকে প্রবাসে ভিন্ন এক আমেজ মেলে বাংলাদেশীদের।

মাছের ব্যবসার আয় রোজগার দিয়ে ভালোই ছিলেন মনু। বড় সাধ করে রেষ্টুরেন্টের ব্যবসাতেও নিজের নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। বিনিয়োগ করেছিলেন দীর্ঘদিনের সঞ্চয়।

আশা ছিলো, বেশি উপার্জন করে কপাল ফেরানোর। কিন্তু সেই আশার গুঁড়ে বালি।

সৌদি আরবের বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভেঙ্গে দিয়েছে তার সেই স্বপ্ন। রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা লাটে উঠেছে। এখান ধারদেনা শোধ করতেই দিন-রাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে তাকে।

মাছ বেচেই স্বপ্ন দেখেন লোকশান কাটিয়ে লাভে ফেরার। কিন্তু এখন যা অবস্থা তাতে মাছ বেচে নিজের খরচ তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে মনুর জন্য। 

ফেনী পূর্ব ফাজিলপুর মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে শাহাবুদ্দিন মনুর (৩৭)। লোহিত সাগর পাড়ের বানিজ্যিক নগরী জেদ্দার চুকসামাক কর্নেসেই মাছ নিয়ে কারবার তার। ১৯ কেজি ওজনের হামর, ১৬ কেজি ওজনের আগাম ১৫ কেজি ওজনের বয়াত আর ২৬ কেজি ওজনের তামাক টোনাসহ সামুদ্রিক নানা জাতের মাছই মেলে তার দোকানে।

শাহাবুদ্দিন মনু জানান, এখানে আর শান্তি নেই। সৌদিকরণের ধারায় অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে আমাদের জীবনে দূর্দিন নেমে এসেছে। কফিল আর আকামা ফি বেড়েছে বহুগুণে। বেড়েছে প্রবাসে জীবনযাত্রার খরচ। তারওপর দেনার বোঝায় বিপর্যস্ত।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে নিয়োগকর্তার (কফিল) অধীনে মনুরা কাজ করবে সেখানে চারজন প্রবাসী শ্রমিকের অনুপাতে একজন সৌদি নাগরিক রাখতেই হবে।

কাগজে কলমে রাখলেও তার বেতন দিতে হবে নূন্যতম সাড়ে তিন হাজার রিয়াল।

এটা মানতে গিয়ে চারজনের বেতনের ভাগ থেকে একজন সৌদির বেতন কেটে নেয়া হচ্ছে। সে হিসেবে আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় টিকে থাকাই মুশকিল।

এ পরিস্থিতিতে অনেকেই দেশের পথ ধরছেন। স্বপ্নগুলো গুমড়ে মরছে মরুভূমির মরীচিকায়। শেষ পর্যন্ত কি দেনার বোঝা ঘাড়ে নিয়েই দেশে ফিরতে হবে- এমন শংকায় দিন কাটে তার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর