জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে তামাক থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। সেই সাথে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন জোটের সদস্যরা।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) তরুণ প্রজন্ম রক্ষা নীতিতে তামাক কোম্পানির প্রভাব বন্ধ করুন প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষ থেকে এ পরামর্শ দেয়া হয়। এ সময় তামাক নয় খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর আহবান জানানো হয়।
জোটের সভাপতি আবু নাসের খান বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো থেকে ট্যাক্স আদায় করে তা জনস্বাস্থ্যে খরচ করার দাবি জানাচ্ছি। বর্তমানে নিম্ন আয়ের মানুষদের প্রতি বছর চিকিৎসা খাতে অনেক খরচ হচ্ছে। আর তার জন্য দায়ী এই তামাক।
তিনি বলেন, তামাককে কেনো পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে রেড ক্যাটেগরিতে ঘোষণা দেয়া হবে না? তামাক প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্য মন্ত্রণালয়কে চ্যালেঞ্জ করছে। তারা তাহলে কতটা শক্তিশালী ভাবুন। তবে বর্তমানে তামাক বিরোধী আইন শক্তিশালী হওয়ায় সরকারকে সাধুবাদ জানান সভাপতি।
এ সাময় ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান লিখিত বক্তব্যে সুপারিশ করে বলেন, তামাকের ক্ষেত্রে ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) আর্টিকেল ৫ দশমিক ৩ অনুসারে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ও কোড অফ কন্ডাক্ট প্রণয়ন করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, তামাক কোম্পানির সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, তামাক কোম্পানির বোর্ড থেকে সরকারি কর্মকর্তারা ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর (বিএটি) বোর্ড মেম্বার হিসেবে কি দায়িত্ব পালন করছে সে সংক্রান্ত তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে, সরকারি কর্মকর্তাদের স্বজন ও নিকটাত্মীয় বিএটিতে কার্যরত এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকলে তার ঘোষণা দিতে হবে, রাজস্ব বোর্ড, কৃষি, অর্থ, শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তামাক থেকে নির্ভরতা কমানোর রোডম্যাপ প্রণয়নের পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণের বিপক্ষে বা তামাক নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত হতে পারে বা তামাক কোম্পানির লাভবান হতে পারে এ ধরনের কোনো সুপারিশ বা পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে, তামাক কোম্পানির সাথে সব ধরণের আলোচনা নথিভুক্ত এবং অনির্ধারিত আলোচনা বন্ধ করতে হবে।
এ সময় বিভিন্ন তামাক ও বিড়ির সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সমালোচনা করেন বক্তারা। এবং এনবিআরের চেয়ারম্যান এর দুর্বলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের উপদেষ্টা আবু নাসের খান, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সাংবাদিক নিখিল চন্দ্র ভদ্র প্রমুখ ও সুশান্ত সিনহা প্রমুখ।