বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চেঙ্গুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা লিখন হাওলাদার (৩৪)। বর্তমানে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। উন্নত চিকিৎসা করতে না পারায় দীর্ঘ ১২ বছর ধরে শিকলে বন্দী আছেন। চেঙ্গুটিয়া গ্রামের শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে লিখন হাওলাদার।
লিখনের মা রোকেয়া বেগম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘ছেলে ১২ বছর আগেও স্বাভাবিক ছিল। এর আগে সে পাশের বাড়ির এক মেয়েকে ভালোবাসতো। কিন্তু মেয়েটির অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যায়। এরপর থেকে লিখন আস্তে আস্তে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। এমনকি অনেককে মারধর করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তার আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে ঘরে শিকলে বেঁধে রাখা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘লিখনের চিকিৎসা করাতে জায়গা জমি বিক্রি করা হয়েছে। এমনকি ঢাকা ও পাবনার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েও কোনও লাভ হয়নি। সব হারিয়ে এখন আমরা সর্বস্বান্ত। এখন চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য না থাকায় আবারও তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছ। ঠিকমতো খাবার দিতে না পারায় দুর্বলও হয়ে পড়েছে লিখন।’
এদিকে, ছেলের চিন্তায় দিনমজুর পিতা শাহজাহান হাওলাদার গত রমজানে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। বর্তমানে তিনিও চিকিৎসার অভাবে শয্যাশায়ী রয়েছেন।
এ অবস্থায় দিশেহারা লিখনের মা রোকেয়া বেগম। উন্নত চিকিৎসা করা গেলে লিখন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে বলে মনে করেন তিনি। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল চন্দ্র দাস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘লিখনের বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে তাকে আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে।’