হান্ড্রেড পার্সেন্ট আই অ্যাম নট গিল্টি: সাবাব

, জাতীয়

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 00:25:22

ঢাকা: ‘আই অ্যাম নট গিল্টি। এটা স্রেফ ষড়যন্ত্র। প্রত্যক্ষদর্শী কেউ একজন আমার সামনে এসে এসব বলুক। প্রয়োজনে আমি নোয়াখালী থেকে যেকোন মুহূর্তে ঢাকা চলে এসে ফেস করবো। সামনে ইলেকশন, এর কারণে এই ষড়যন্ত্র। আমি এসব প্রত্যক্ষদর্শীদের চিনি না। দিস ইজ পলিটিক্স ইন বাংলাদেশ। ইউ নেভার নো, কে কখন কার পেছনে লাগে। তবে আমাদের গাড়ি কারণে যে পরিবারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সকল দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা আমার। আবারও বলছি- হান্ড্রেড পার্সেন্ট, আই অ্যাম নট গিল্টি।’’

বৃহস্পতিবার (২১ জুন) রাত ৮ টায় বার্তা২৪.কম-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বলেন সাবাব চৌধুরী। এর মাধ্যমে এই প্রথম বুধবারের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কোন গণমাধ্যমে নিজের বক্তব্য ধরলেন সাবাব।

এমপি পুত্র সাবাব চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ‘‘সত্যি বলছি, আমি ওই ইনসিডেন্টে ছিলাম না। আমার ড্রাইভার এটা করে পালিয়েছে। কোন সলিড প্রুভ কারও কাছে নেই যে-আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম। ঘটনার দিন আমি নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নদী পরিদর্শনে ছিলাম। ও এলাকার ছাত্রলীগ সভাপতি আমার সঙ্গে ছিলো। তাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।

‘‘আমাদের পরিবারের ৬ টি গাড়ি। ১৯ জুন ঘটনার রাতে আমার আম্মু উত্তরাতে তার বান্ধবীর বাসায় ওই গাড়িতে একটি পার্সেল পাঠাতে দিয়েছিলেন। আমার ড্রাইভার একা ছিলো। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে এক্সিডেন্ট করেছে। পরে ভয়ে সে গাড়িটি রেখে পালিয়ে গেছে। তাকে খুঁজে বের করার ১০০ ভাগ চেষ্টা চালাচ্ছি।

সাবাব মনে করেন, ‘‘ভাইরাল হওয়ার জন্য কেউ তার বিরুদ্ধে মনগড়া কথা বলে দিয়েছে। এগুলো সাধারণ মানুষজনই করে। ওরা চায়  ফেমাস হতে। আর পাবলিক এটেনশন পাওয়া জন্যও এসব করেছে।’’

তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ তার পূর্ব-পরিচিত নয়-এমনকি কারও বাড়ি এক জায়গায় নয়, তাহলে কেন বলবে এমন প্রশ্নের জবাবে সাবাব বলেন, আওয়ামী লীগের পার্টি সেক্রেটারির বাড়ি নোয়াখালী, এক্স-সেনা প্রধানের বাড়ি নোয়াখালি, পারটেক্স গ্রুপের মালিক হাশেম সাহেবসহ অনেক শিল্পপতির বাড়ি নোয়াখালি.. তাই নোয়াখালির মানুষজন শুধু নোয়াখালি থাকেন না দেশের অনেক জায়গায় ছড়িয়েছেন। অনেক ভাবেই একটা ঘটনা মেলাতে হবে। তাই এটা বোঝা মুশকিল যে কে কোথায় কিভাবে কি করলো?’’

ঘটনার দেড় দিন পরে নিজের অবস্থান কেন তুলে ধরছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সাবাব বলেন, ‘এতকিছুর পর স্বাভাবিকভাবে মেন্টালি শকড হয়ে পড়েছিলাম। আমার আব্বুর জনসভায় গতকালকেও ৫০ হাজারের বেশি মানুষের উপস্থিতি ছিলো। এরকম দুর্ঘটনা ঘটলে আব্বুর জনসভায় এতো মানুষজন হতো না।

এ ঘটনায় সাবাব ছিলেন না তার কি প্রমাণ আছে এমন প্রশ্নের জবাবে সাবাব বলেন, ‘‘নোয়াখালীর সুবর্ণচর ছাত্রলীগের সভাপতিকে জিজ্ঞেস করুণ। তিনি আরও চ্যালেঞ্জ করেন, মহাখালি থেকে সংসদ ভবন যত সিসিটিভি ফুটেজ আছে সব পরীক্ষা করে দেখুন আমি ছিলাম কি -না ওই ঘটনায়।’’

সাবাব বলেন, ‘আমি সবকিছু সত্য বলছি। আমার ক্যারিয়ার এবং পার্সোনালিটি আছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছে, তারা সব সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করুক।

ওই সন্ধ্যা বা রাতের কোন ছবি বা ফুটেজ আছে- যাতে প্রমাণ হয় আপনি নোয়াখালিতে ছিলেন? যা দেখে বোঝা যাবে আপনি এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না,-এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি ওই সময় নোয়াখালি অবস্থানের কোন ছবি তুলি নাই।’’

সাবাব বলেন, যেহেতু আমার পরিবারে গাড়ি দিয়েই এই দুর্ঘটনা হয়েছে। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় আমি ওই পরিবারের পাশে দাঁড়াবো। তাদের সঙ্গে আমরা নেগোসিয়েশনে যাবো। মামলা করে সব সময় সবকিছু সমাধান হয় না। তাই ওই পরিবারের সব দায়িত্ব নেওয়ার আমার ইচ্ছা আছে।’’

 তিনি প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ‘একটা মোটরসাইকেল কি করে অডি জিপের সাথে ধাওয়া করে পেরে উঠে? বাইকে এটা সম্ভব নয়। যা বলছে প্রত্যক্ষদর্শী বাইকার।

সাবাব মনে করেন, গাড়িটির নাম্বার যেহেতু দুর্ঘটনাস্থলে পরে ছিলো। আর ৩ থেকে ৪ মিনিটের তা ফেসবুকে ছড়িয়েছে। সে কারণে ওই নাম্বার প্লেট দেখে কেউ পেছনে লেগেছে। যা সম্পূর্ণ পলিটিক্যালি একটা ঘটনা। আর সেখানে আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম তার কোন প্রমাণ নেই।’’

‘‘হয়তো ওই বাইকার লোকটা পাঠাও বাইকার। যে কারণে সবসময় তার ইন্টারনেটে থাকতে হয়। বিভিন্ন ট্রাফিক গ্রুপগুলোতে সে থাকে এবং চেক করে। এভাবে সে পোস্ট করার পর কেউ তাকে আমার পেছনে লাগিয়ে দিয়েছে। ওভাবে এটা ছড়াতে পারে। এটা হতে পারে বলে আমি মনে করছি’’-সাবাব বলেন।

তিনি বলেনে, ‘‘আমার নামে যা উঠার উঠুক, এখন আমার প্রথম কাজ হলো যেহেতু আমার পরিবারের গাড়িতে দুর্ঘটনা হয়েছে তাই আমি সেই ফ্যামেলিটাকে দেখবো। ওই পবিারের ক্ষতির পাশে দাঁড়াবো।’’

দেশের বাইরে এখনই যাচ্ছে না জানিয়ে বলেন, ‘‘আমি নিউজিল্যান্ড যাচ্ছি না। যদি অ্যাক্সিডেন্ট আমি করতাম তাহলে ওইদিনই চলে যেতে পারতাম। হান্ড্রেড পার্সেন্ট আই অ্যাম নট গিল্টি। আমার এখন কোন নিউজিল্যান্ড যাওয়া নেই।’’

নিজের পরিচয় তুলে ধরে সাবাব বলেন, ‘‘আমার আব্বু সাকসেসফুল সংসদ সদস্য, আপনি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে খবর নেন, আমার জিপিএ ৩ দশমিক ৪। ৪ এর মধ্যে এই রেজাল্ট তার মানে ৯৩ ভাগ। ইটস নট এ জোক। আমি সিঙ্গাপুরে সেরা হাইস্কুলে পড়েছি। আমি কোন ড্রাগি না। আমার অনেক রেসপনসিবিলিটি আছে। আমর ফেসবুকে ৩৬ হাজার ফলোয়ার আছে। এগুলো কি উড়ে উড়ে আছে। নোয়াখালিতে একবার এসে জিজ্ঞেস করেন কে সাবাব চৌধুরী?

‘‘আমার অতীত কোন খারাপ রেকর্ড নেই। গুলশান বনানীতে কোন সময়ই কোন আড্ডা ছিলো না। এ ব্যাপারে কোন সলিড প্রুভ কারও কাছে নেই। আমি গাড়ি চালাইনি। আছি ছিলাম নোয়াখালিতে। আর আমি নিউজিল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসছি ৫ মাস পর। গত ৭ জুন দেশে আসি আর ১১ জুন নোয়াখালিতে আসছি। ১২ জুন ৬০ হাজার মানুষকে নিজ হাতে একটা শাড়ি, লুঙ্গি ও ১০০ টাকার বিলিয়ে দিয়েছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর