‘সরকারি কর্মকর্তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে’

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 01:42:39

২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্র হওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করেছেন সেটি পূরণ করতে হলে সরকারি কর্মকর্তা ও আমলাদের মানসিকতার পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ উন্নত রাষ্ট্র হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আপনাদের সকলের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।

শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে তেজগাঁওস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন রাষ্ট্রায়ত্ব করপোরেশন ও কোম্পানিসমূহের উত্তম চর্চা অবহিতকরণ ও পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ বিষয়ক এ কর্মশালাটি আয়োজন করে গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট (জিআইইউ), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

সালমান এফ রহমান বলেন, সরকারে থাকার আট নয় মাসের অভিজ্ঞতায় যেটা দেখেছি সেটা হলো মিড লেভেল, সিনিয়র লেভেল ম্যানেজমেন্ট এই মানসিকতা পরিবর্তন হচ্ছে; অনেকটা হয়েছে। কিন্তু একটা টপ লেভেল যখন ডিসিশন মেকিংয়ে আসেন তখন কালেক্টিভ ডিসিশন মেকিংয়ে সে পরিবর্তনটা যে গতিতে হওয়া দরকার সেটা কিন্তু এখনো ততটা হচ্ছে না।

মানসিকতার পরিবর্তনের কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলে আসতেছে। এর ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ন্যানো প্রযুক্তি, রোবটিক্স এ জাতীয় জিনিস ইতিমধ্যেই আমাদের দেশে কিছু কিছু চলে এসেছে ভবিষ্যতে আরও আসবে। এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হলে ও প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আসলেই আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারি কর্মকর্তাদের গুরুত্ব তুলনা করতে গিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, আমার মতে প্রধানমন্ত্রী পলিটিক্যাল লিডারদের থেকে আপনাদের ওপর বেশি নির্ভরশীল। আমরা যখনি গিয়ে কিছু বলি প্রধানমন্ত্রী কিন্তু সচিব, জেষ্ঠ্য সচিবদের সঙ্গে আমাদের কথাগুলি আলোচনা করে তারপরে সিদ্ধান্ত নেন। আমাদেরকে উনি ইগনোর করছেন এমনটা নয়। বরং আমরা মনে করি প্রধানমন্ত্রী আপনাদের বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। আসলে আপনারা কিন্তু পারফর্ম করছেন। আপনারা যে সহযোগিতা করছেন সেটা না করলে আমরা এখানে আসতে পারতাম না।

পাবলিক ও প্রাইভেট সেক্টরের গুরুত্ব তুলে ধরে বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমান বলেন, অনেক জায়গায় আমরা শুনি পাবলিক সেক্টরের প্রয়োজন নাই। সরকার শুধু পরিবেশ তৈরি করবে এবং বেসরকারি খাত সবকিছুর কাজ করবে। সরকার সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু এটার সঙ্গে আমি একমত নই। অনেক জায়গায় আমাদের পাবলিক সেক্টরের প্রয়োজন আছে। একদম পাশাপাশি। তবে যেখানে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্বার্থ যুক্ত আছে সেখানে পাবলিক সেক্টরের প্রয়োজন আছে।

তিনি বলেন, বেসরকারি খাতকে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। সরকারি খাতও যে বেসরকারি খাতের মত দক্ষ হতে পারে আর এটা খুবই সম্ভব। আমাদের প্রতিবেশী দেশেই তার অনেকগুলি প্রমাণ আছে। ভারতের যে ফরচুন ৫০০ কোম্পানি আছে তার মধ্যে ইন্ডিয়ান অয়েল নাম্বার ওয়ান কোম্পানি। তাদের দক্ষতা ও মুনাফার চিত্র যদি দেখেন এটা ভারতের যেকোনো ফরচুন ৫০০ কোম্পানির সঙ্গে তুলনায় যেতে সক্ষম। আর এটার শতভাগ মালিকানা ভারত সরকারের। তারা যদি হতে পারে আমরা কেন হতে পারব না। আমি বিশ্বাস করি আমরাও পারব।

‘বেসরকারি খাতের সব থেকে সমস্যাটা হচ্ছে ওভারম্যানিং (অতিরিক্ত জনবল) । ওভারম্যানিংটার অর্থ যে- লোক আমাদের অনেক আছে কিন্তু কর্মক্ষম ও দক্ষ লোক নাই। এটা আমাদের অন্যতম সমস্যা। বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম।

এ সম্পর্কিত আরও খবর