'প্রথমবার আইন ভঙ্গ করলে সামান্য জরিমানা'

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 00:28:43

নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ যদি কেউ প্রথমবারের মত ভঙ্গ করে তাহলে সামান্য শাস্তি হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

রোববার (৪ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন আইন যদি কেউ প্রথমবার ভঙ্গ করে তাহলে তাকে সামান্য পরিমাণ জরিমানা করা হবে। একই সঙ্গে তাকে একটি লিফলেট দেওয়া হবে যে পরবর্তীতে এই একই অপরাধ করলে তাকে আইন অনুযায়ী পুরো জরিমানা বা শাস্তি ভোগ করতে হবে। এক সপ্তাহ নতুন আইনে কোন মামলা হবে না। এরপর থেকে রশিদের মাধ্যমে মামলা নেওয়া শুরু হবে। আর পস মেশিনের সার্ভার আপডেট করার পরে এ পদ্ধতিতে মামলা নেওয়া শুরু হবে।

তিনি বলেন, নতুন ট্রাফিক আইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য সাজার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে সবার মধ্যে আইন মানার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, নতুন আইন বাস্তবায়ন নিয়ে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। সব শেষ গত ১ নভেম্বর গেজেট পাশের মাধ্যমে আইন বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর ফলে পুরনো আইনের ধারা পরিবর্তন হয়ে গেছে। নতুন ধারা সম্পর্কে ডিএমপির ৮০০ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইন সম্পর্কে নতুন একটি বই বাজারে এসেছে। সব কর্মকর্তাকে এক মাসের মধ্যে নতুন আইন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের বই দেয়া হয়েছে এবং সেই বইয়ের ওপর পরীক্ষা নেয়া হবে।

নতুন আইনে মামলা দেয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন কর্মকর্তা যদি ব্যক্তিগত খাতিরে আইন অমান্যকারীকে মামলা না দিয়ে অন্য কোনোভাবে সুবিধা নিতে চায় আর কেউ যদি সেটা নিয়ে অভিযোগ করে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা সার্জেন্টদের ক্যামেরা দেব। এমন ঘটনার যদি অভিযোগ থাকে আর যদি সার্জেন্টের ক্যামেরা বন্ধ থাকে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের নামে মামলা দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে ৯৯% যাত্রী হেলমেট পড়ছে। গুটি কয়েক পড়ছে না যাদের অধিকাংশই পুলিশ ও সার্জেন্ট। এই আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ স্বচ্ছ থাকবে। আমরা পুলিশের সবাইকে বলে দিয়েছি ট্রাফিকের লোকজন যদি আইন অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আইনের কোনো ধারায় যদি কাউকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে সে বিষয়ে শুনানির ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

কমিশনার আরও বলেন, আইনটি প্রয়োগের আগে আমরা যারা যানবাহন ব্যবহার করি, তাদের সচেতন করছি। বাস টার্মিনাল ও গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনে মাইক দিয়ে আইনের বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি। শ্রমিকদের জড়ো করে আইন সম্পর্কে ধারণা দেয়া হচ্ছে। জাতীয় পত্রপত্রিকায়ও নতুন আইনের ধারা নিয়ে ফিচার দেয়া হয়েছে।

প্রায়ই মামলার কাগজ তোলা নিয়ে অনেককে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ভোগান্তি রোধে পুলিশের কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, আমরা মামলা দিলে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ে তার দায়িত্বে কাগজ দেই। অন্য কোথাও কাগজ দেই না। উনার কাছে গেলেই ভোগান্তি ছাড়া গাড়ির কাগজপত্র পাওয়া যাবে।

পথচারীরা জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে পার না হলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা। এই পরিমাণটি আগে ছিল ২০০ টাকা। অথচ রাজধানীর অনেক সড়কে ওভারব্রিজ বা জেব্রা ক্রসিং নেই। সেক্ষেত্রে ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জনগণের রাস্তা পারাপারে সাহায্য করবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর