দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের অনুসন্ধান কেন্দ্র

ময়মনসিংহ, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ময়মনসিংহ | 2023-08-22 16:23:09

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন স্টেশনের অনুসন্ধান কেন্দ্র। ফলে এখানে এসে কোনো যাত্রীই তার কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের জবাব না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন। যাত্রীদের অভিযোগ, অনুসন্ধান কেন্দ্রে কেউ না থাকায় এখানে মিলছে না সেবা।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ স্টেশনের কাউন্টারের সামনে গিয়ে দেখা যায়, অনুসন্ধান কেন্দ্রের তিনটি কাউন্টারের দুটি স্থায়ীভাবে আটকে রাখা হয়েছে। আর একটি কাউন্টার কিছু একটা দিয়ে ঢেকে রাখা রয়েছে। দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ডাক দেয়া হলেও ভেতর থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। প্রতিদিন একই চিত্র থাকে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন যাত্রী।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রেলস্টেশনের ১ নম্বর ফটকের বাঁ পাশেই অনুসন্ধান কেন্দ্রটির অবস্থান। এর বিপরীতে রয়েছে টিকিট কাউন্টার। তাই সব সময়ই এখানে অনেক ভিড় থাকে। টিকিট কাটতে আসা যাত্রীরা কোনো প্রয়োজন হলে অন্য মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেন। এতে যাত্রীদের সময়ের অপচয় হয়। অনেক সময় টিকিট কাউন্টারসহ অন্য অফিসে কিছু একটা জানতে গিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। আবার অনেকে হকার বা চা-দোকানিদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করেন।

কয়েকজন যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সরকার দিন দিন রেলওয়ের উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে তথ্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সেবা তারা পাচ্ছেন না।

 ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

রায়হান নামে এক যাত্রী অভিযোগ করে জানান, তিনি অনুসন্ধান কেন্দ্রে ট্রেন শিডিউল সম্পর্কে জানতে এসেছিলেন। কিন্তু এখানে তথ্য না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে অন্য স্টাফদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনেছেন। তবে এভাবে তথ্য জানার জন্য বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করা মোটেও স্বাচ্ছন্দ্যকর নয় বলে মন্তব্য করেন ঈশিতা নামের আরেক যাত্রী।

অনুসন্ধান কেন্দ্রটি বন্ধ থাকার পেছনে লোকবলের সংকটের কথা জানালেন স্টেশন সুপার জহুরুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রায় ১০ বছরের বেশি সময় ধরে অনুসন্ধান কেন্দ্রে কোনো ঘোষক নিয়োগ না দেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আপাতত এখানে তিনজন টিকিট কালেক্টর দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। তারা পালা করে অনুসন্ধানকেন্দ্রের ভেতর থেকে মাইকে ঘোষণার মাধ্যমে যাত্রীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

তবে এই সেবা শুধু স্টেশনে তাৎক্ষণিক ট্রেন প্রবেশ ও ছাড়ার সময় এবং প্রারম্ভিক ট্রেনগুলো কোন কোন প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করছে, সেই ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর বাইরে আর কোনো তথ্য দিতে শোনা যায় না। তাই আলাদাভাবে কারোর কোনো তথ্য জানার প্রয়োজন হলে স্টেশন সুপার ও প্ল্যাটফর্ম স্টেশন মাস্টারসহ অন্যদের কাছে যেতে হয়।

স্টেশন সুপার জহুরুল ইসলাম জানান, টিকিট কালেক্টরদের কাজ মূলত স্টেশনের গেটে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট সংগ্রহ করা। কিন্তু এই কাজের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে মাইকে ঘোষণা দেয়ার কাজও তাদের করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সংকট দূর করে লোক নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর